পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা

Photo of author

By Nur Islam

শীতকালে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিযায়ী পাখির দেখা মেলে। আমরা অনেকেই হয়তোবা পরিযায়ী পাখি দেখে থাকি। কিন্তু এই পরিযায়ী পাখি গুলোর নাম হয়তোবা অনেকেই জানিনা। এই আর্টিকেলটিতে পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা তুলে ধরা হবে। 

পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা

সারা বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের পরিযায়ী পাখি দেখা যায়। এক এক ধরনের পরিযায়ী পাখি এক এক অঞ্চলে বসবাস করার জন্য পরিযান করে। কিছু প্রজাতির পরিযায়ী পাখি রয়েছে যেগুলো শীতকালে বাংলাদেশের বিভিন্ন হাওর অঞ্চলে আসে দীর্ঘদিন পর্যন্ত বসবাস করে থাকে। নিচে বিভিন্ন ধরনের এবং বিভিন্ন গোত্রের পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা তালিকা তুলে ধরা হয়েছে। 

নামNames
সুটি শিয়ারওয়াটারSooty Shearwater
আডেলি পেঙ্গুইনAdélie Penguin
বার-টেইলড গডউইটBar-tailed Godwit
পেক্টোরাল স্যান্ডপাইপারPectoral Sandpiper
নর্দান হুইটিয়ারNorthern Wheatear
নর্দান পিন্টেইলNorthern Pintail
স্যান্ডহিল ক্রেনSandhill Crane
স্নো গুজSnow Goose
বার-হেডেড গুজBar-headed Goose
রেড নাটRed Knot
শর্ট-টেইলড শিয়ারওয়াটারShort-tailed Shearwater
কলিওপ হামিংবার্ডCalliope Hummingbird
গ্রেট রিড ওয়ার্বলারGreat Reed Warbler
ইউরেশিয়ান রাইনেকEurasian Wryneck
উইলো ওয়ার্বলারWillow Warbler
ওসপ্রেOsprey
আমুর ফ্যালকনAmur Falcon
গ্রেট স্নাইপGreat Snipe
পাইড হুইটিয়ারPied Wheatear
হোয়াইট-ক্রাউন্ডড স্প্যারোWhite-crowned Sparrow

পরিযায়ী পাখি কাকে বলে

যে সকল পাখি প্রজনন করার জন্য, খাদ্যের খোঁজে, তীব্র গরম কিংবা শীত থেকে বাঁচতে অথবা অন্য কোনো কারণে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ভ্রমণ করে সেই সকল পাখিকেই পরিযায়ী পাখি বলা হয়। বিভিন্ন ধরনের পরিযায়ী পাখি রয়েছে। 

যেসকল পাখি স্বল্প দূরত্বে পরিযান করে সেগুলোকে স্বল্পদৈর্ঘ্য পরিযান পাখি বলা হয়। আর যে সকল পাখি এর চেয়ে অধিক দূরত্বে ভ্রমণ করে সেগুলোকে বলা হয় মধ্যদৈর্ঘ্য পরিযান পাখি আর যে সকল পাখি কয়েক হাজার মাইল পরিভ্রমণ করে সেগুলোকে বলা হয় দীর্ঘদৈর্ঘ্য পরিযান পাখি। 

বাংলাদেশের পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা

পরিযায়ী পাখি বলতে আমরা শুধু সেই পাখিগুলোকেই বুঝে থাকি যেগুলো বাইরে থেকে বাংলাদেশে আসে। কিন্তু বাংলাদেশেরও এমন কিছু পরিযায়ী পাখি রয়েছে যেগুলো বিভিন্ন মৌসুমে বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে বসবাস করে। নিচে বাংলাদেশের পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা তুলে ধরা হলো। 

নামNames
লালঝুঁটি ভূতিহাঁসRed-crested pochard
বেগুনি কালেম Purple Swamphen
উত্তরে ল্যাঞ্জাহাঁসNorthern Pintail
সিঁথিহাঁসEurasian wigeon
মরচে–রং ভূতিহাঁসFerruginous pochard l white-eyed pochard
পিয়াং-হাঁসGadwall

পরিযায়ী পাখির ছবি

উপরে উল্লেখিত পরিযায়ী পাখির নামের তালিকায় পাখির ছবি তুলে ধরা হয়নি। আপনি যদি পরিযায়ী পাখির ছবি দেখে নিতে চান তাহলে নিচে উল্লেখিত পরিযায়ী পাখির ছবি গুলো দেখে নিতে পারেন। নিচে চিত্রসহ পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা তুলে ধরা হয়েছে।

পরিযায়ী পাখির বৈশিষ্ট্য

পরিযায়ী পাখির বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেই বৈশিষ্ট্য গুলোর সাহায্যে খুব সহজে আপনি পরিযায়ী পাখি শনাক্ত করতে পারবেন। এবং এই বৈশিষ্ট্য গুলোর কারণেই এই পাখিগুলো এত দূরত্বে ভ্রমণ করতে সক্ষম হয়। তো চলুন দেখে নেয়া যাক, পরিযায়ী পাখির বৈশিষ্ট্য সমূহ।

  • ঋতুর পরিবর্তন সম্পর্কে জ্ঞাত: পরিযায়ী পাখি ভিন্ন ভিন্ন সিজনে ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে পরিভ্রমণ করে থাকে। তারা ঋতুর পরিবর্তন সম্পর্কে বিশেষ ভাবে জ্ঞাত। এই পাখিগুলো লক্ষণ দেখেই বুঝতে পারে যে অমুক সিজন আসতে চলেছে এবং অমুক অঞ্চলে গেলে আমরা নিরাপদে থাকতে পারবো। পাখির ঋতু পরিবর্তন সম্পর্কিত জ্ঞান খুবই বিস্ময়কর।
  • দিক নির্ণয়ের অসাধারণ দক্ষতা: পরিযায়ী পাখির দিক নির্ণয়ের অসাধারণ দক্ষতা রয়েছে। তারা হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে নির্দিষ্ট একটি অঞ্চলে চলে যায় সেখানে বসবাস করে আবার সেই অঞ্চল থেকে তাদের আগের বাসস্থানে ফিরে যায়। ধারণা করা হয় তারা সূর্যের গতিবিধি, তারকা এবং পৃথিবীর চুম্বকীয় আকর্ষণের উপর ভিত্তি করে দিক নির্ণয় করে থাকে। 
  • দীর্ঘ সময় শক্তি ধরে রাখার ক্ষমতা: পরিযায়ী পাখি এক অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলে যাওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ভ্রমণ করে থাকে। এই দীর্ঘ ভ্রমণে তারা তাদের শক্তি ধরে রাখতে পারে এবং কখনোই নার্ভাস হয়ে পড়ে না। ভ্রমণ করার পূর্বে পরিযায়ী পাখিগুলো তাদের দেহে খাদ্য জমা করে রাখে। কোন কোন পরিযায়ী পাখি রয়েছে যারা ভ্রমণ করার পূর্বে অধিক আহার করে এবং তাদের শরীরকে দ্বিগুণ করে ফেলে। দীর্ঘ ভ্রমন পথে শরীরের জমে থাকা চর্বি তাদের চলার পথে জ্বালানি হিসেবে কাজ করে। 
  • উচ্চ সহনশীলতা: পরিযায়ী পাখিগুলো উচ্চ সহনশীল। তারা দীর্ঘ ভ্রমণ পথে বিভিন্ন অঞ্চল এবং বিভিন্ন জলবায়ুর মধ্য দিয়ে পরিভ্রমণ করে থাকে। এসবের মধ্যে তারা নিজেদেরকে মানিয়ে নিতে পারে এবং নিরাপদে তাদের কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছে যায়। এর পাশাপাশি অন্যান্য পাখির চেয়ে এই পাখিগুলো দীর্ঘসময়ের উড়তে পারে। 
  • অসাধারণ স্মৃতিশক্তি: পরিযায়ী পাখিগুলো অসাধারণ স্মৃতিশক্তির অধিকারী হয়ে থাকে। তারা দীর্ঘ ভ্রমন করে কয়েক হাজার মাইল দূরে অবস্থান করে, এবং সেখানে অবস্থান করা শেষ হয়ে গেলে পরবর্তীতে তারা আবার তাদের পূর্বের বাসস্থানে ফিরে যায়। এবং এটা তারা করে একেবারেই নির্ভুল ভাবে। অর্থাৎ তারা কখনোই পথ হারিয়ে অন্য কোথাও চলে যায় না।

পরিযায়ী পাখি বছরের কোন সময় দেখা যায়

বাংলাদেশে সাধারণত শীতকালে পরিযায়ী পাখি দেখা যায়। তবে সব পাখি যে শুধু শীতকালেই পরিযান করে বিষয়টি এরকম নয়। বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি পরিযান করে থাকে। বসন্ত, শরৎ এবং শীত কালে পরিযায়ী পাখিরা সাধারণত পরিযান করে থাকে। বিভিন্ন অঞ্চলে বসন্তকালে পরিযায়ী পাখিরা সাধারণত প্রজনন করার জন্য স্বল্প দূরত্বে পরিযান করে থাকে। আবার কিছু কিছু বাকি শরৎ কালে স্বল্প সময়ের জন্য পরিযান করে। 

তবে অধিকাংশ পাখি পরিযান করে শীতকালে। বাংলাদেশের যে সকল পরিযায়ীপাখি দেখতে পাওয়া যায় সেগুলো মূলত শীতকালের পরিযায়ী পাখি। এগুলো পোলার অঞ্চল থেকে বা অধিক ঠান্ডাযুক্ত স্থান থেকে নিজেদেরকে সুরক্ষিত রাখার জন্য কম ঠান্ডা যুক্ত স্থানে পরিযান করে থাকে।

১০ টি পরিযায়ী পাখির নাম

ইতোমধ্যেই উপরে পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা উল্লেখ করা হয়েছে। চাইলে আপনি সেখান থেকেই পরিযায়ী পাখিগুলোর নাম দেখে নিতে পারেন। যাই হোক আপনি যদি স্পেসিফিক ভাবে ১০ টি পরিযায়ী পাখির নাম জেনে নিতে চান তাহলে নিম্ন বর্ণিত ১০ টি পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা দেখে নিন। 

Leave a Comment