ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো? সঠিক উপায় জেনে নিন

Photo of author

By Nur Islam

ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য অবশ্যই আপনাকে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য বেছে নিতে হবে এবং সেই অনুযায়ী সময় দিয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। দক্ষতা ছাড়া, কোন স্কিল না শিখে কখনোই আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন না। কিভাবে মোবাইল দিয়ে সহজে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন তা নিচে বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করা হবে। 

উপস্থাপনা

বর্তমান ডিজিটাল যুগে ফ্রিল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় ও লাভজনক পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ইন্টারনেটের প্রসার ও মোবাইল ফোনের সহজলভ্যতার কারণে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখা এখন অনেক সহজ। মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং কাজ করা যেমন সহজ হয়েছে, তেমনি এর জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাও মোবাইল দিয়ে অর্জন করা সম্ভব।

আপনার যদি মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট কানেকশন থাকে, তবে আপনি ঘরে বসেই ফ্রিল্যান্সিং শিখতে এবং শুরু করতে পারেন। মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখার জন্য প্রয়োজন শুধুমাত্র কিছু সময়, ধৈর্য, এবং সঠিক পথে দক্ষতা অর্জনের ইচ্ছা। 

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো? আপনি যদি এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর অনুসন্ধান করে থাকেন সেক্ষেত্রে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই আর্টিকেলটিতে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শেখার যাবতীয় উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে পাশাপাশি কিভাবে আপনি মোবাইল দিয়েই ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন সেই বিষয়ে সম্পর্কেও আলোকপাত করা হয়েছে। 

ফ্রিল্যান্সিং কাকে বলে

ফ্রিল্যান্সিং হলো এমন একটি পেশা যেখানে আপনি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন। এতে করে কাজের জন্য ধরা বাধা কোন সময়সীমা নেই আপনি আপনার সুবিধা অনুযায়ী যেকোনো সময় কাজ করতে পারবেন। যেহেতু ঘরে বসে, এবং কোন ধরনের বাধা ধরা নিয়ম ছাড়াই নিজের ইচ্ছায় অনুযায়ী কাজ করা যায়, সে কারণে বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং কাজের চাহিদা অনেক বেশি। 

যাইহোক এই আর্টিকেলটিতে, ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো, ফ্রিল্যান্সিং এ কোন কাজের চাহিদা বেশি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর সহ ফ্রিল্যান্সিং সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই যদি আপনি ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগের সাথে পড়ুন। আশা করি উপকৃত হতে পারবেন। 

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

ফ্রিল্যান্সিং শিখার প্রথম ধাপ হলো নির্দিষ্ট বিষয়ের উপরে দক্ষতা অর্জন করা। অনলাইন মার্কেটপ্লেসে বিভিন্ন কাজের জন্য অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ফ্রিল্যান্সারের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আপনি যদি লেখালেখি, গ্রাফিক ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, ওয়েব ডিজাইন বা ডাটা এন্ট্রি এর মতো কাজ করতে চান, সেক্ষেত্রে অল্প সময়ের মধ্যেই তা শিখে ফেলতে পারবেন এবং কাজ শুরু করে দিতে পারবেন। 

তবে এই স্কিলগুলো যেহেতু তুলনামূলক সহজ তাই প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। সুতরাং আপনার হাতে যদি পর্যাপ্ত সময় থাকে তাহলে আরো মূল্যবান কোন বিষয়ের উপরে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। যাই হোক নিচে, ফ্রিল্যান্সিং শিখার কয়েকটি ধাপ তুলে ধরা হলো:

  • স্কিল বাছাই করুন: সর্বপ্রথম আপনাকে যেকোনো একটি নিস পছন্দ করতে হবে আপনি কোন নিসের উপরে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে চান। এটি হতে পারে কনটেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বা বা অন্য কোন সেক্টর।
  • ইউটিউব ও অনলাইন কোর্স: অনেক প্রতিষ্ঠান এবং অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সাররা ইউটিউব এবং অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য ফ্রি কোর্স প্রদান করে থাকে। Udemy, Coursera, এবং Skillshare এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলোতে আপনি সহজেই কোর্স করতে পারেন। আপনি যেই বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে চান, সে সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা ইউটিউব এর মাধ্যমে পেতে পারেন। ইউটিউবে অসংখ্য ভিডিও রয়েছে যেগুলো থেকে আপনি বিনামূল্যে অনেক কিছু শিখতে পারবেন। তবে, প্রফেশনালি কাজ করতে চাইলে ভাল কোন প্রতিষ্ঠান থেকে কোর্স করা উচিত। 
  • প্র্যাকটিস করুন: শিখার পর নিজের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য নিয়মিত অনুশীলন করুন। প্রয়োজনে ইন্টার্নশিপ হিসেবে কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করতে পারেন এতে করে আপনার দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। মনে রাখবেন ফ্রিল্যান্সিং-এ সফল হতে হলে প্র্যাকটিসের বিকল্প নেই। যত প্র্যাকটিস করবেন তত কাজ শিখতে পারবেন। 
  • অনলাইন মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন: কাজ পাওয়ার জন্য প্রথমে অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস যেমন Upwork, Fiverr বা Freelancer এ একটি প্রফাইল তৈরি করতে হবে। চাইলে আপনি আউট অফ মার্কেটপ্লেসে ক্লায়েন্ট হান্টিং করতে পারেন। সেক্ষেত্রে, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এবং ইমেইল মার্কেটিং অধিক কার্যকর। 

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং শিখার কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। এগুলো আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং শিখার প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করে তুলবে। তবে মনে রাখবেন আপনি যদি প্রফেশনালি ফ্রিল্যান্সিং করতে চান সেক্ষেত্রে একটি ল্যাপটপ কিংবা ডেস্কটপ ব্যবহার করা উচিত। শুধুমাত্র মোবাইলের উপরে নির্ভর করে ফ্রিল্যান্সিং করা বেশ কঠিন। যাইহোক, যেসব পদ্ধতি অনুসরণ করলে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখা সহজ হবে সেগুলো নিচে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো:

  • মোবাইল ফ্রেন্ডলি কোর্স: অনেক ফ্রিল্যান্সিং কোর্স এখন মোবাইলের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়। Udemy, Coursera, Skillshare, এবং Lynda এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলোতে এমন অনেক ফ্রিল্যান্সিং কোর্স রয়েছে যেগুলো খুব সহজেই আপনি আপনি মোবাইল দিয়ে সম্পন্ন করতে পারেন। 
  • মোবাইল অ্যাপস: বেশ কিছু অ্যাপ রয়েছে যা আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন স্কিল ডেভলপ করতে সাহায্য করবে। যেমন: Canva (গ্রাফিক ডিজাইন), Kinemaster (ভিডিও এডিটিং), এবং Google Docs (লেখালেখি)।
  • ইউটিউব: ইউটিউব থেকে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কিত হাজারো ভিডিও টিউটোরিয়াল পাওয়া যায়। আপনার মোবাইল দিয়ে সহজেই এসব ভিডিও দেখে শিখতে ফ্রিল্যান্সিং পারেন। আপনি যদি একটু ভালোভাবে ঘাটাঘাটি করেন তাহলে ফ্রিতে ইউটিউব থেকে অনেক কিছুই শিখতে পারবেন। 
  • অনলাইন কমিউনিটি: বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং ফোরাম বা ফেসবুক গ্রুপে যোগ এড থাকুন। এতে করে আপনি অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারদের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং অনেক কিছুই শিখতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ

ফ্রিল্যান্সিং কাজ হচ্ছে মহাসমুদ্রের মত, এখানে কাজের কোন অভাব নেই হিউজ অ্যামাউন্টের কাজ আছে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে। এই কাজগুলোর মধ্য থেকে যেই কাজটি আপনার জন্য পারফেক্ট এবং আপনি যে কাজটি করতে সাচ্ছন্দ বোধ করেন সেই কাজটি ফ্রিল্যান্সিং পেশা হিসেবে বেছে নিতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং কাজ সমূহের মধ্য থেকে, সবথেকে জনপ্রিয় যে সকল কাজ রয়েছে সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো। 

  • কন্টেন্ট রাইটিং: অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ব্লগ, বা মার্কেটিং কন্টেন্ট লেখার কাজ করতে পারেন। এটি মোবাইল দিয়ে সহজেই করা যায়।
  • গ্রাফিক ডিজাইন: মোবাইল দিয়ে Canva বা Photoshop Express এর মতো অ্যাপ ব্যবহার করে লোগো ডিজাইন, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ডিজাইন, এবং অন্যান্য গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ করতে পারেন।
  • ভিডিও এডিটিং: সহজ কিছু ভিডিও এডিটিং এর কাজ রয়েছে যেগুলোখুব সহজেই মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে করা যায়। মোবাইলের মাধ্যমে Kinemaster, Capcut বা InShot অ্যাপ ব্যবহার করে খুব সহজে আপনি ছোট খাটো এই ভিডিওগুলো এডিট করে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন। 
  • ডাটা এন্ট্রি: সহজ কিছু ডাটা এন্ট্রির কাজে রয়েছে যেগুলো খুব সহজে মোবাইল দিয়ে সম্পন্ন করা যেতে পারে। চাইলে আপনি সেই সকল ছোট ছোট কাজ দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। 
  • ভয়েস ওভার: মোবাইলের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাষায় ভয়েস ওভার কাজ করে আয় করা সম্ভব। এই কাজের জন্য ভালো মাইক্রোফোন ও রেকর্ডিং অ্যাপ প্রয়োজন হয়। আপনার যদি ভালো মানের ফোন থাকে তবে এই কাজটি খুব সহজে আপনি আপনার ফোনের মাধ্যমে করতে পারবেন। 
  • সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট: মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যবসায়ের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারেন। এতে কন্টেন্ট তৈরি, পোস্ট শিডিউলিং সহ অন্যান্য কাজ খুব সহজেই করতে পারবেন। 
  • অনুবাদ: মোবাইল ব্যবহার করে ট্রানসলেশন বা অনুবাদের কাজ করা যেতে পারে আপনি যদি বিশেষ কোনো ভাষায় দক্ষ হয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে এই কাজটিকে ফ্রিল্যান্সিং কাজ হিসেবে নিতে পারেন। 
  • ভয়েস ট্রান্সক্রিপশন: বিভিন্ন অডিও বা ভিডিও কন্টেন্ট ট্রান্সক্রিপ্ট করতে পারেন। এই কাজটি মোবাইলে Dictation বা Voice-to-Text অ্যাপ ব্যবহার করে সহজেই করা যায়। 
  • অনলাইন টিউটরিং: মোবাইলের মাধ্যমে ভিডিও কল বা শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করতে সহায়তা করতে পারেন। মোবাইল অ্যাপ যেমন Zoom বা Google Classroom অ্যাপসের সাহায্যে খুব সহজেই আপনি এই কাজগুলো করতে পারবেন। এই অ্যাপসগুলো ব্যবহার করে সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে অনেক স্টুডেন্টকে একসাথে পাঠদান করতে পারবেন। 
  • ইমেজ রিটাচিং ও এডিটিং: Snapseed বা Lightroom এর মতো মোবাইলে ব্যবহারযোগ্য অ্যাপস গুলো ব্যবহার করে পেশাদার ইমেজ এডিটিং ও রিটাচিংয়ের কাজ করতে পারেন।
  • ডিজিটাল মার্কেটিং: মোবাইল দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ের ডিজিটাল মার্কেটিং, ইমেল মার্কেটিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, এবং বিজ্ঞাপন পরিচালনা করতে পারেন। Mailchimp বা Google Ads অ্যাপ মোবাইল থেকে ব্যবহার করা যায়। 
  • অনলাইন সার্ভে: বিভিন্ন সার্ভে ওয়েবসাইট রয়েছে যেই ওয়েবসাইট গুলোতে খুব সহজে আপনি মোবাইলের মাধ্যমে সার্ভে করতে পারবেন। সার্ভে করে অনেকেই অনলাইন থেকে ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করে থাকে। 
  • ই-কমার্স প্রোডাক্ট লিস্টিং: বিভিন্ন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম যেমন Amazon বা eBay এর জন্য পণ্য তালিকাভুক্তির কাজ মোবাইল দিয়ে করা যায়। যদি আপনার এই কাজে দক্ষতা থাকে তাহলে প্রোডাক্ট লিস্টিং এর কাজ করতে পারেন এই কাজের চাহিদা প্রচুর। 
  • ওয়েবসাইট টেস্টিং: বিভিন্ন ওয়েবসাইটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে পারেন, যেখানে আপনাকে ওয়েবসাইটের বিভিন্ন ফিচার যাচাই করতে হবে। এ ধরনের কাজ সাধারণত বিভিন্ন মাইক্রো ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলোতে পাওয়া যায়। 
  • ডিজিটাল আর্ট ও ইলাস্ট্রেশন: Procreate Pocket বা Sketchbook এর মতো মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে কিছু কিছু ডিজিটাল আর্ট ও ইলাস্ট্রেশনের কাজ করা যায়। চাইলে আপনি মোবাইল ফোন ব্যবহার করে সিম্পল ইলাস্ট্রেশনের কাজ করতে পারেন। 

ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার

বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কার্য রয়েছে কিছু কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো করার জন্য তেমন কোন দক্ষতার প্রয়োজন হয় না কম্পিউটার পরিচালনায় দক্ষ হলেই সেই কাজগুলো করা যায় যেমন ডাটা এন্ট্রি, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি। 

আবার কিছু কাজ রয়েছে যেই কাজগুলো বেশ কঠিন এবং শিখতে অনেক সময়ের প্রয়োজন হয় যেমন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি। এ কাজগুলোর ডিমান্ড অনেক এবং পারিশ্রমিক অনেক। যাইহোক,  নিচে ফ্রিল্যান্সিং কাজের কয়েকটি ক্যাটাগরি তুলে ধরা হলো। 

  • কনটেন্ট ক্রিয়েশন: এর মধ্যে ব্লগ রাইটিং, কপিরাইটিং, এবং কনটেন্ট মার্কেটিং অন্তর্ভুক্ত।
  • ক্রিয়েটিভ ডিজাইন: লোগো ডিজাইন, মোশন গ্রাফিক্স, ভিডিও এডিটিং, এবং 3D মডেলিং এই ক্যাটাগরির অধীনে পড়ে।
  • ডিজিটাল মার্কেটিং: সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, SEO (সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন), ইমেইল মার্কেটিং, এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
  • প্রোগ্রামিং ও টেকনিক্যাল স্কিল: ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, এবং ডেটাবেস ম্যানেজমেন্ট।
  • ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট: ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট, ডাটা এন্ট্রি, এবং ইমেইল ম্যানেজমেন্ট কাজ।

ফ্রিল্যান্সিং কোর্স

ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য ইন্টারনেটে প্রচুর কোর্স রয়েছে। ইন্টারনেটে বিভিন্ন বিষয়ের উপরে অনেক ফ্রি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স রয়েছে। আপনি ফ্রি ফ্রিল্যান্সিং কোর্সগুলো থেকে নির্দিষ্ট কাজের প্রতি ধারণা পেতে পারেন তবে প্রফেশনালি সেই কাজটি শিখতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে প্রিমিয়াম কোর্স করতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যে সকল প্রতিষ্ঠান ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করিয়ে থাকে সেগুলোর তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো। 

  • Udemy: এখানে বিভিন্ন বিষয়ে কোর্স পাওয়া যায়, যেমন গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, মার্কেটিং ইত্যাদি।
  • Coursera: বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কোর্স এখানে পাওয়া যায়, এবং এটি সনদ প্রদানের ব্যবস্থা রাখে।
  • Skillshare: ক্রিয়েটিভ কাজ যেমন ফটোগ্রাফি, ডিজাইন, এবং রাইটিং শেখার জন্য এই প্ল্যাটফর্মটি বেশ জনপ্রিয়।
  • LinkedIn Learning: এটি কর্পোরেট ও প্রফেশনাল দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে কোর্স প্রদান করে।

ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি

সব ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজের চাহিদা সমান নয়। কিছু কিছু ফ্রিল্যান্সিং কাজে রয়েছে যেগুলোর চাহিদা অনেক বেশি। আবার এমন কিছু ফ্রিল্যান্সিং কাজ রয়েছে যেগুলোর চাহিদা তুলনামূলক অনেক কম। যাইহোক, বর্তমানে যে সকল ফ্রিল্যান্সিং কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি সেগুলোর তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো।

  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ও ডিজাইন: ওয়েবসাইট তৈরি ও ডিজাইনের কাজের সব সময় বেশি থাকে এবং এই কাজ যারা করে থাকে তারা ভালো মানের পারিশ্রমিক পায়।
  • ডিজিটাল মার্কেটিং: বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য ও সেবা প্রচার করার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ও ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ওপর নির্ভরশীল, ফলে এই কাজের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
  • গ্রাফিক ডিজাইন ও ভিডিও এডিটিং: ব্র্যান্ডিং ও কন্টেন্ট তৈরির জন্য গ্রাফিক ডিজাইন ও ভিডিও এডিটিং এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
  • কনটেন্ট রাইটিং ও কপিরাইটিং: ওয়েবসাইট এবং ব্লগের জন্য নিয়মিত কনটেন্ট প্রয়োজন, ফলে এই কাজের চাহিদাও অনেক।

নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা নতুনদের জন্য কিছুটা কঠিন মনে হতে পারে, তবে সঠিক গাইডলাইন এবং ধৈর্য থাকলে এটি অনেক সহজ হয়ে যায়। নতুনদের জন্য কিছু টিপস:

  • একটি স্কিল শেখার উপর মনোনিবেশ করুন: অনেকগুলো স্কিল শিখতে চেয়ে বিভ্রান্ত না হয়ে একটি স্কিলকে ভালোভাবে শেখার চেষ্টা করুন।
  • মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন: Fiverr, Upwork, Freelancer এর মতো জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে নিজের প্রোফাইল তৈরি করুন এবং প্রথম কাজ পাওয়ার চেষ্টা করুন।
  • ক্লায়েন্টদের সাথে ভাল সম্পর্ক তৈরি করুন: আপনার প্রথম কাজগুলোতে ভালো রেটিং ও ফিডব্যাক পাওয়ার জন্য ক্লায়েন্টের সাথে সৎ ও পেশাদার আচরণ করুন।
  • প্রতিনিয়ত শিখুন: নতুন নতুন স্কিল শিখে নিজের প্রোফাইলকে সমৃদ্ধ করুন এবং উচ্চমানের কাজ দিন।

উপসংহার

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো? আশা করি এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর পেয়েছেন। এর পরেও যদি আপনার কোন কিছু জানার থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানিয়ে দিতে পারেন। উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব। একটি বিষয় মনে রাখা জরুরি, আর তা হলো প্রফেশনাল ভাবে ফ্রিল্যান্সিং করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটার ব্যবহার করতে হবে। তবে শুরুতে আপনি মোবাইল ফোন দিয়েই শুরু করতে পারেন। 

Leave a Comment