স্নাতকোত্তর মানে কি? জেনে নিন

Photo of author

By Nur Islam

স্নাতকোত্তর মানে হলো মাস্টার্স কিংবা ফাজিল পাস করা। স্নাতকোত্তর সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। 

উপস্থাপনা

শিক্ষা মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। এটি শুধুমাত্র পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি করে না, বরং ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে উন্নয়নের পথে সহায়তা করে। আজকের এই আলোচনায় আমরা জানব “স্নাতকোত্তর মানে কি” এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তর এর মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে।

স্নাতকোত্তর মানে কি?

স্নাতকোত্তর (Masters) একটি উচ্চতর শিক্ষার স্তর, যা সাধারণত স্নাতক ডিগ্রি (Bachelor’s) সম্পন্ন করার পর অর্জন করতে হয়। অনার্স, ডিগ্রী বা ফাজিল পাস করার পরে এক বছর বা দুই বছর মেয়াদের মাস্টার্স/কামিল পাস করাই হলো স্নাতকোত্তর। স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অধিকতর জ্ঞান এবং ব্যুৎপত্তি অর্জন করে। 

সুতরাং কোন চাকরিতে যদি স্নাতকোত্তর উল্লেখ থাকে, তাহলে আপনি যদি মাস্টার্স কিংবা কামিল পাস হন তাহলে সেই পদে আবেদন করার যোগ্য হবেন। আশা করি স্নাতকোত্তর বিষয়টি কি তা স্পষ্ট ভাবে বুঝতে পেরেছেন।

স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কি?

স্নাতক হলো তিন বছর বা চার বছর মেয়াদী কোর্স যা ইন্টারমিডিয়েট বা আলিম সম্পন্ন করার পরে করতে হয়। অর্থাৎ অনার্স বা ফাজিল হল স্নাতক। পক্ষান্তরে স্নাতকোত্তর হল অনার্স বা ফাজিল পাস করার পরে এক বছর বা দুই বছর মেয়াদী মাস্টার্স বা কামিল। 

স্নাতক ও স্নাতকোত্তর এর মধ্যে পার্থক্য

স্নাতক ও স্নাতকোত্তর এর মধ্যে মূল পার্থক্য হলো পড়াশোনার গভীরতা এবং সময়কাল। স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর শিক্ষার্থীরা সাধারণত কর্মজীবনে প্রবেশ করে অথবা উচ্চতর ডিগ্রির জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে। নিচে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর এর মধ্যে পার্থক্য  তুলে ধরা হলো। 

বিষয়স্নাতক (Bachelor’s)স্নাতকোত্তর (Master’s)
সময়কাল৩-৪ বছর১-২ বছর
পাঠ্যক্রমের গভীরতাবিষয়ের মৌলিক জ্ঞানবিষয়ের বিশেষায়িত ও গভীর জ্ঞান
গবেষণা সুযোগসীমিতগবেষণা ও থিসিসের ওপর গুরুত্ব
কর্মজীবনে প্রভাবপ্রাথমিক পর্যায়ের চাকরিউচ্চ বেতনের এবং বিশেষজ্ঞ পেশা
যোগ্যতাস্নাতক ডিগ্রি সম্পন্নস্নাতকোত্তর স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন
পাঠ্যবিষয়ক সুযোগমৌলিক তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞানগবেষণামূলক ও বিশেষায়িত শিক্ষা
কাজের সুযোগসাধারণ পেশাগত দায়িত্বউচ্চতর পেশাগত ও নেতৃত্বের ভূমিকা

স্নাতকোত্তর ডিগ্রি মানে কি?

স্নাতক অর্থাৎ অনার্স বা ফাজিল পাস করার পরে এক বছর বা দুই বছর মেয়াদী মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করলেই হল স্নাতক উত্তর ডিগ্রি। সুতরাং আপনি যদি মাস্টার্স কিংবা কামিল পাস হন ক্ষেত্রে আপনি একজন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি ধারী।

 

স্নাতকোত্তর মানে কি পাস?

 স্নাতকোত্তর পাস বলতে এমন একটি ডিগ্রিকে বোঝানো হয়, যা স্নাতক ডিগ্রি (অনার্স বা ফাজিল) সম্পন্ন করার পর শিক্ষার্থীরা অর্জন করে। অর্থাৎ স্নাতকোত্তর মানে অনার্স কিংবা কামিল পাস।

বাংলাদেশে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি বলতে “মাস্টার্স” বা “কামিল” ডিগ্রিকে বোঝানো হয়। যারা অনার্স (Bachelor’s) বা আলিম পাশ করেছেন, তারা পরবর্তী পর্যায়ে মাস্টার্স বা কামিল করতে পারেন। এর মাধ্যমে তারা নিজ নিজ বিষয়ে আরও গভীরভাবে পড়াশোনা করতে পারেন এবং সেই বিষয়ে অধিক তারা ব্যুৎপত্তি অর্জন করার সুযোগ পান।

স্নাতকোত্তর মানে অনার্স কিংবা কামিল পাস:

  • অনার্স পাস: অনার্স সম্পন্ন করার পর শিক্ষার্থীরা স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) পর্যায়ে পড়াশোনা শুরু করে, যেখানে নির্দিষ্ট বিষয়ে উচ্চতর জ্ঞান অর্জন করা হয়।
  • কামিল পাস: ফাজিল পাশ করার পরে যারা কামিল পর্যায়ে পড়াশোনা করেন, এবং সেটা সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারেন তাহলে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করলেন। 

স্নাতক ও স্নাতকোত্তর এর মধ্যে তুলনা

  • সময়কাল: স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করতে সাধারণত ৩ থেকে ৪ বছর সময় লাগে, যেখানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনে ১ থেকে ২ বছর সময় লাগে।
  • পাঠ্যক্রম: স্নাতক পর্যায়ের পাঠ্যক্রমে বিষয়ের মৌলিক দিকগুলো পড়ানো হয়, যেখানে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বিষয়ের গভীর এবং বিশেষায়িত পাঠ্যক্রম থাকে।
  • গবেষণা: স্নাতক পর্যায়ে গবেষণার সুযোগ কম, কিন্তু স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা গবেষণায় আরও বেশি জড়িত হয়।
  • কর্মজীবন: স্নাতক ডিগ্রি অর্জনকারীরা সাধারণত প্রাথমিক পর্যায়ের চাকরিতে যোগ দেয়, যেখানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরা উচ্চতর পেশাগত দায়িত্ব পালন করে এবং বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করে

কেন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি গুরুত্বপূর্ণ?

স্নাতকোত্তর ডিগ্রি একজন ব্যক্তির পেশাগত এবং ব্যক্তিগত জীবনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। এটি শিক্ষার্থীদের পেশাগত ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ হওয়ার সুযোগ দেয় এবং তাদের কর্মজীবনের সম্ভাবনাকে আরও উন্মুক্ত করে।

স্নাতকোত্তর ডিগ্রির কিছু প্রধান সুবিধা:

  • বিশেষজ্ঞ জ্ঞান: স্নাতকোত্তর ডিগ্রি শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হিসেবে গড়ে তোলে।
  • গবেষণার সুযোগ: শিক্ষার্থীরা গবেষণা করতে পারে, যা তাদের দক্ষতা ও জ্ঞানকে আরও বৃদ্ধি করে।
  • কর্মজীবনে উন্নতি: স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরা উচ্চ বেতনের চাকরি পেতে পারে এবং পদোন্নতির সুযোগ পায়।
  • আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি: অনেক দেশে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত, যা বৈশ্বিক চাকরির বাজারে সুযোগ সৃষ্টি করে।

উপসংহার

স্নাতকোত্তর শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। এটি শিক্ষার্থীদের পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে সফল হতে সহায়তা করে। “স্নাতকোত্তর মানে কি” আশা করি এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানতে পেরেছেন। সেই সাথে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর এর মধ্যে পার্থক্য আশা করি সে সম্পর্কেও জেনেছেন।

Leave a Comment