নতুন নিয়মে এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

Photo of author

By Nur Islam

এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে কাজে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ হতে হবে। তাহলে আপনি খুব সহজেই এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাবেন এবং হ্যান্ডসাম টাকা উপার্জন করতে পারবেন। 

এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

সেনজেন ভুক্ত দেশ এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। তাই এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য আবেদন করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে সঠিক নিয়ম-কানুন জেনে নিতে হবে। এই আর্টিকেলটিতে এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হবে। তাই সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন, আশা করি উপকৃত হতে পারবেন। 

আপনি যদি এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে চান এবং নন ইউ সিটিজেন হয়ে থাকেন, তাহলে সর্বপ্রথম আপনাকে শর্ট টাইমের জন্য ভিসা নিতে হবে (সর্বোচ্চ ছয় মাস)। আর এই ভিসার জন্য আপনাকে ডি-ভিসায় আবেদন করতে হবে। মনে রাখবেন, ডি-ভিসার জন্য আবেদন করার পূর্বে অবশ্যই আপনার চাকুরীদাতা কে স্থানীয় পুলিশ এবং বর্ডার গার্ডের অফিসে আপনার ব্যাপারে তথ্য প্রদান করতে হবে। তা না হলে কখনোই আপনি এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাবেন না। 

আপনি যদি ছয় মাসের বেশি সময় অবস্থান করতে চান, সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে রেসিডেন্স পারমিটের জন্য আবেদন করতে হবে। কেননা বৈধ রেসিডেন্স পারমিট ছাড়া আপনি ছয় মাসের অধিক এস্তোনিয়ায় অবস্থান করতে পারবেন না। প্রথমে আপনাকে টেম্পোরারি রেসিডেন্স পারমিটের জন্য আবেদন করতে হবে। এই রেসিডেন্স পারমিটের মাধ্যমে আপনি সর্বোচ্চ দুই বছর সেখানে কাজ করতে পারবেন। 

আপনি যদি এই দুই বছর ভালোভাবে সেখানে কাজ করতে পারেন, তাহলে এরপরে পাঁচ বছরের জন্য রেসিডেন্স পারমিটের আবেদন করতে পারবেন। যদি আপনি স্থানীয় স্থায়ীভাবে থাকতে চান, সেক্ষেত্রে এই পাঁচ বছরের রেসিডেন্স পারমিট এর উপরে ভিত্তি করে স্থায়ীভাবে সেখানে বসবাস করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

বাংলাদেশে এস্তোনিয়া দূতাবাস

বাংলাদেশে এস্তোনিয়া দূতাবাস নেই। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের নয়া দিল্লিতে এস্তোনিয়া দূতাবাস রয়েছে। তাই যদি আপনি এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করতে চান, সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে নয়া দিল্লিতে অবস্থিত এস্তোনিয়া দূতাবাসে যোগাযোগ করতে হবে। 

বাংলাদেশ বাংলাদেশসহ নেপাল এবং শ্রীলঙ্কতেও এস্তোনিয়া দূতাবাস নেই। তাই এই অঞ্চলের অধিবাসীদেরকে এস্তোনিয়া ভিসা পেতে নয়াদিল্লিস্থ এস্তোনিয়া দূতাবাসে যোগাযোগ করতে হয়। 

এস্তোনিয়া যেতে কত টাকা লাগে

এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় সেখানে যেতে ১,৫০,০০০ টাকা থেকে ৪/৫ লাখ টাকাও লাগতে পারে। এস্তোনিয়া যেতে কত টাকা লাগে, তা বিভিন্ন বিষয়ের উপরে নির্ভর করে। যদিও এস্তোনিয়ার সরকারি ভিসা ফি মাত্র ১০০ ইউরো যা বাংলাদেশী টাকায় ১৩,০০০ টাকার মতো। তবে এর পাশাপাশি আরো অনেক ধরনের আনুষাঙ্গিক খরচ রয়েছে। 

আপনি যদি এজেন্সির মাধ্যমে এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার খরচ কিছুটা বেশি হবে। কেননা ভিসা প্রসেসিং এজেন্সি গুলো প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করে থাকে। তাই এজেন্স নির্ণয় করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে এবং সঠিক এজেন্সি খুঁজে বের করতে হবে। 

কিছু কিছু নামধারী এজেন্সি রয়েছে যেগুলো অনেক সময় গ্রাহকের সাথে প্রতারণা করে থাকে। তাই মিষ্টি কথায় প্রতারিত না হয়ে ভালোভাবে যাচাই বাছাই করার মাধ্যমে এজেন্সি খুজে নিতে হবে। যদি আপনি, ভালো এজেন্সি খুজে না পান, তাহলে কমেন্ট করে জানিয়ে রাখতে পারেন সম্ভব হলে সাহায্য করবো। 

এস্তোনিয়া দেশ কেমন

আপনার মনে যদি এই ধরনের প্রশ্ন জাগে যে, এস্তোনিয়া দেশ কেমন? তাহলে এই প্রশ্নের এক কথায় উত্তর হলো: এই দেশটি ভালো। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটো জোট ভুক্ত ছোট এই দেশটি উত্তর-পূর্ব ইউরোপে অবস্থিত। এই দেশটিতে মাত্র ১২ লক্ষ মানুষের বসবাস। 

প্রযুক্তিগত দিক থেকে উন্নত এই দেশটিতে ই-রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ রয়েছে। দেশটি ছোট হলেও খুবই উন্নত এবং সুন্দর একটি দেশ। আপনার যদি, দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি কাজের জন্য এস্তোনিয়া যেতে পারেন। বিশেষ করে আপনার যদি EU Blue Card থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি খুবই ভালো মানের জব পাবেন এস্তোনিয়ায়। 

এস্তোনিয়া টুরিস্ট ভিসা

এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য উপরের বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর্টিকেলটির এই অংশে এস্তোনিয়া টুরিস্ট ভিসা সংক্রান্ত বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হলো। তাই এস্তোনিয়া টুরিস্ট ভিসা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জানতে মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। 

উন্নত প্রযুক্তি এবং মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতির সৌন্দর্যের কারণে প্রতিবছর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রচুর মানুষ এস্তোনিয়া ভ্রমণ করতে যায়। তাই চাইলে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন এস্তোনিয়া। তবে এস্তোনিয়া যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে ভিসা নিতে হবে। 

ফ্রেশার হিসেবে আপনি এস্তোনিয়া ভিসা পাবেন না। এস্তোনিয়ার ভিসা পেতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে পূর্বে কোন সেনজেন ভুক্ত দেশ ভ্রমণ করতে হবে। আপনার যদি পূর্বে সেনজেন ভুক্ত কোন দেশ ভ্রমণ করে থাকে তাহলেই আপনি এস্তোনিয়া টুরিস্ট ভিসা পাবেন অন্যথায় নয়। 

আর বাংলাদেশ থেকে এস্তোনিয়া টুরিস্ট ভিসা করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে ভারতের দিল্লিতে অবস্থিত এস্তোনিয়া দূতাবাসের যোগাযোগ করতে হবে। যদিও বাংলাদেশ এস্তোনিয়া কনসুলেট রয়েছে, তবে এর মাধ্যমে আপনি ভিসা প্রসেস করতে পারবেন না। 

এস্তোনিয়া কি সেনজেন দেশ

হ্যাঁ এস্তোনিয়া সেনজেন ভুক্ত দেশ। সেনজেনভুক্ত এ দেশটি ২০০৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করে। শুধু তাই নয় একই বছর তারা ন্যাটোজোটেরও অন্তর্ভুক্ত হয়। ইউরোপের এই দেশটি প্রযুক্তি দিক থেকে এতটাই এগিয়ে যে, ৯৯ ভাগ সরকারি সেবা তারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে পেয়ে থাকে।

এমনকি এই দেশে পার্লামেন্ট নির্বাচনে অনলাইনের মাধ্যমে ভোটাভুটি হয়। শুধু তাই নয়, ঘরে বসে থেকেই তারা গুরুত্বপূর্ণ নথি কিংবা ডকুমেন্টে স্বাক্ষর করে অনলাইনের মাধ্যমে। আর এ কারণেই এস্তোনিয়াকে বলা হয় “ই-কান্ট্রি”

এস্তোনিয়া স্টুডেন্ট ভিসা

অনেকেই ইউরোপিয়ান কান্ট্রি এস্তোনিয়ায় পড়াশোনা করার জন্য যেতে আগ্রহী থাকেন। এস্তোনিয়া স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যেসকল ক্রাইটেরিয়া রয়েছে সেগুলো যদি আপনি ফুলফিল করতে পারেন তাহলে আপনিও পেতে পারেন এস্তোনিয়া স্টুডেন্ট ভিসা। এস্তোনিয়া স্টুডেন্ট ভিসা বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা রয়েছে। 

যেমন: পড়ালেখা শেষ করার পরে আপনি ছয় মাস সময় পাবেন সেখানে চাকরি খোঁজ করার। পাঁচ বছর সেখানে বসবাস করলেন স্থায়ীভাবে বসবাস করার আবেদন করতে পারবেন, এবং যদি আট বছর ভালোভাবে সেখানে বসবাস করতে পারেন, আপনার যদি একটি স্থায়ী চাকরি থাকে এবং আপনি যদি এস্তোনিয়ান ভাষা আয়ত্ত করতে পারেন তাহলে এস্তোনিয়ার নাগরিক হওয়ার ও সুযোগ রয়েছে। 

যাই হোক, কিভাবে আপনি এস্তোনিয়া স্টুডেন্ট ভিসার যান না আবেদন করতে পারেন তা নিচে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হলো। নিম্ন বর্ণিত পদ্ধতি যথাযথভাবে অবলম্বন করলে আশা করা যায়, এস্তোনিয়া স্টুডেন্ট ভিসা পাবেন। 

  • এস্তোনিয়া স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে কাগজপত্র জমা দিতে হবে: 
  • পাসপোর্ট ও সদ্য তোলা ছবি
  • মার্কশিট সহ সকল সনদপত্র
  • IELTS স্কোরের সনদপত্র। 
  • এডমিশন লেটার
  • ভিসা আবেদন ফর্ম ও টেম্পোরারী রেসিডেন্স আবেদন ফর্ম

উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র সহকারে আপনাকে দিল্লিতে অবস্থিত এস্তোনিয়ান দূতাবাসে যোগাযোগ করতে হবে। দিল্লিরস্থ এস্তোনিয়া দূতাবাসের ঠিকানা নিম্নরূপ। 

C15, Malcha Marg, Chanakyapuri

New Delhi, 110 021, India

Tel +91 11 4948 8650 । Tel (+372) 613 4850 (calls from Estonia)

Fax +91 11 4948 8651 । Email: Embassy.New-Delhi@mfa.ee

Visa queries: consul.delhi@mfa.ee

Website: http://www.newdelhi.vm.ee

এস্তোনিয়া বেতন কেমন

এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যারা এস্তোনিয়া যেতে চায় তাদের কমন একটি প্রশ্ন হল এস্তোনিয়া বেতন কেমন? আসলে বেতন কেমন তার সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার যোগ্যতা এবং দক্ষতার উপরে আপনার যদি যোগ্যতা ভালো থাকে দক্ষতা ভালো থাকে সেক্ষেত্রে আপনি ভালো বেতনের চাকরি করতে পারবেন পক্ষান্তরে যদি আপনার যোগ্যতা কিংবা দক্ষতা ভালো না হয় সেক্ষেত্রে আপনার বেতন অনেক কম হবে। 

তবে, এস্তোনিয়ায় অবস্থিত কোম্পানিগুলোতে সর্বনিম্ন বেতন ৬০০ ইউরোর মত। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭০,০০০ টাকার সমান। সুতরাং এ কথা বলা যায় যে, এস্তোনিয়য় বেতন সর্বনিম্ন বেতন ৭০,০০০ টাকা। আর যদি আপনার দক্ষতা ভালো থাকে সেক্ষেত্রে আপনি ২ লাখ থেকে 5 লাখ টাকা বেতনের চাকরি করতে পারেন। 

1 thought on “নতুন নিয়মে এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা”

Leave a Comment