Sponsored

একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা ১০০ শব্দ

0
81

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা ১০০ শব্দে লিখতে বলা হয়। আপনি যদি নিম্ন বর্ণিত একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা (১০০ শব্দ) রচনাটি আত্মস্থ করে রাখেন তাহলে যে কোন ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় খুব সহজেই এটি লিখতে পারবেন। নিচে একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা (১০০ শব্দ) সহ পূর্ণাঙ্গ রচনা তুলে ধরা হলো।

 

একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা ১০০ শব্দ

একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জীবনে গর্বের দিন, যা মাতৃভাষা বাংলার অধিকার রক্ষার জন্য ছাত্রসমাজের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে। ১৯৫২ সালের এই দিনে রফিক, বরকত, সালাম ও জব্বারসহ অনেকেই শহীদ হন। তাঁদের ত্যাগের ফলে বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পায়। এ দিনটি বর্তমানে ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে সারা বিশ্বে পালিত হয়। 
 
একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন, প্রভাতফেরি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই দিনটি উদযাপিত হয়ে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এটি মাতৃভাষার প্রতি বাঙালির ভালোবাসা, গর্ব ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবে বহু বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে। 
 

একুশে ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রচনা

ইতোমধ্যে উপরে একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা (১০০ শব্দ) তুলে ধরা হয়েছে নিচে "একুশে ফেব্রুয়ারি " পূর্ণাঙ্গ রচনা তুলে ধরা হবে। নিম্ন বর্ণিত রচনাটি মনোযোগ সহকারে পড়লে যেকোনো ধরনের পরীক্ষায় একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা আসলে খুব সহজেই লিখে দিতে পারবেন। 
 
তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে কখনোই নিম্ন বর্ণিত রচনাটি হুবহু কপি করবেন না। কেননা এটি হুবহু কপি করলে তা আপনার ক্রিয়েটিভিটিকে রিপ্রেজেন্ট করবে না। তাই, নিম্ন বর্ণিত রচনাটির মূল থিম ঠিক রেখে নিজের মতো করে লিখতে হবে।
 

উপস্থাপনা

১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষা বাংলার অধিকার রক্ষার জন্য ছাত্রসমাজ জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন। তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের কারফিউ ভঙ্গ করে অগণিত ছাত্র রাজপথে নেমে আসে। রফিক, সালাম, বরকত, জব্বারসহ আরো অনেকেই সেদিন শাহাদাত বরণ করেন। তাদের জীবনের বিনিময়ে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা পায় এবং রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পায়। একুশে ফেব্রুয়ারি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়। এই দিনটি আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা ও ত্যাগের প্রতীক।

 

একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা: ঐতিহাসিক পটভূমি

বাংলা ভাষার অধিকার আদায়ের সংগ্রাম ১৯৪৮ সালে শুরু হয়, যখন পাকিস্তান সরকার উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার চেষ্টা করে। এই সিদ্ধান্ত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। বাংলার মানুষ, বিশেষত ছাত্রসমাজ, এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ছিল সেই রক্তক্ষয়ী দিন, যখন এই সংগ্রাম চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে।

 

একুশে ফেব্রুয়ারি: ভাষা আন্দোলনের কারণ

পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর, কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামত উপেক্ষা করে উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার উদ্যোগ নেয়। এই সিদ্ধান্ত বাংলা ভাষা এবং তার সংস্কৃতি ধ্বংস করার একটি প্রচেষ্টা ছিল। এ কারণেই পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বিশেষ করে ছাত্রসমাজ ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু করে। সাধারণত যে সকল কারণে ছাত্ররা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয় সেগুলো নিম্নরূপ। 

প্রধান কারণসমূহ:

  • বাংলাভাষীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার চেষ্টা।
  • বাংলা ভাষাকে প্রশাসনিক ও শিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রাধিকার না দেওয়া।
  • পূর্ব পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক অধিকার হরণ।
  • পূর্ব পাকিস্তানের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করা।
  • সর্বোপরি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে হীন জ্ঞান করা।

 

২১শে ফেব্রুয়ারি ১৯৫২: ঘটনার বিবরণ

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ছাত্র-জনতা ব্যাপক আন্দোলনে নামে। পুলিশের গুলিতে রফিক, সালাম, বরকত, জব্বারসহ অনেকে শহীদ হন। তাঁদের ত্যাগের মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পায়। এছাড়া অনেক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন এবং পরবর্তীতে পঙ্গুত্ববরণ করেন। 

মহান ভাষা শহীদদের তালিকা:

  • রফিক উদ্দিন আহমেদ
  • সালাম
  • আব্দুল বরকত
  • শফিউর রহমান
  • জব্বার

 

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি

১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এটি বিশ্বব্যাপী ভাষা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্য সংরক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্বের দরবারে উজ্জ্বল হয় এবং বাঙালি জাতির গর্বের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে বিশ্ববাসী জানতে পারে। 

 

একুশে ফেব্রুয়ারির তাৎপর্য

একুশে ফেব্রুয়ারি শুধুমাত্র একটি দিন নয়, এটি বাঙালি জাতির আত্মত্যাগ, ঐক্য ও সংস্কৃতির প্রতীক। এটি আমাদের ভাষার প্রতি ভালোবাসা, গর্ব ও ত্যাগের এক অবিস্মরণীয় উদাহরণ। এই দিনে সবাই শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাদের জন্য দোয়া ও মাখারাত কামনায় বিভিন্ন ধরনের মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়ে থাকে। 

 

একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন

প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে উদযাপন করা হয়। বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে দিনব্যাপী বিভিন্ন ধরনের আয়োজন করা হয়। সরকারি বেসরকারি টেলিভিশনে বিভিন্ন ধরনের আয়োজন করা হয় এবং পত্রিকা গুলোতেও বিশেষ নিবন্ধ ছাপানো হয়। সাধারণত যে কাজগুলো একুশে ফেব্রুয়ারি করা হয় সেগুলো হলো।

  • শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ।
  • সকাল বেলায় প্রভাতফেরি আয়োজন।
  • বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
  • ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরা।

 

উপসংহার

একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জীবনে একটি বিশেষ দিন। এই দিনটি উদযাপন করার মাধ্যমে ভাষা শহীদদেরকে বিশেষভাবে স্মরণ করা হয় এবং তাদের অবদানের স্বীকৃতি দেয়া হয়। সারা বাংলাদেশের বহু দেশে এই দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। 

Search
Categories
Read More
Lifestyle
জমি না কিনে কিভাবে বাড়ি বানাবো? কার্যকর উপায় জানুন
জমি না কিনে বাড়ি বানানোর সহজ উপায় হলো ভাসমান বাড়ি, হাউস বোট অথবা মডিউলার হোম তৈরি...
By nurislam 2024-11-02 04:15:43 0 524
Education
পিতা মাতার প্রতি কর্তব্য রচনা class 3
তৃতীয় শ্রেণীতে অধ্যায়নরত ছোট বাচ্চাদের বার্ষিক পরীক্ষায় কখনো কখনো "পিতা মাতার প্রতি...
By nurislam 2024-11-19 06:36:48 0 83
Tech
ভিটমেট ডাউনলোড করব কিভাবে? জেনে নিন সঠিক নিয়ম
প্রথমে আপনাকে গুগলে “vidmate” লিখে সার্চ করতে হবে এর পরে প্রথমে যে রেজাল্টটি আসবে...
By nurislam 2024-11-02 04:38:15 0 606
Education
মৃৎক্ষার ধাতু কাকে বলে এবং এর বৈশিষ্ট্য
মৃৎক্ষার ধাতু বলতে সাধারণত গ্রুপ ২-এর মৌলসমূহকে বোঝানো হয়, যেগুলি পর্যায় সারণির দ্বিতীয় কলামে...
By nurislam 2024-11-02 04:19:03 0 482
Education
তড়িৎ তীব্রতার সূত্র, একক ও মাত্রা
তড়িৎ তীব্রতার সূত্র: তড়িৎ তীব্রতা (Electric Intensity) একটি পয়েন্টে বিদ্যমান তড়িৎ...
By nurislam 2024-11-02 03:56:22 0 461