উপবৃত্তের সূত্র সমূহ

- প্রকাশিত : ০৫:০৯:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
- / 23
উপবৃত্ত জ্যামিতির খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি আলোচ্য বিষয়। এই আর্টিকেলটিতে উপবৃত্তের সূত্র সমূহ উদাহরণসহ তুলে ধরা হবে। আশা করি নিম্ন বর্ণিত উপবৃত্তের সূত্র সমূহ মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি উপবৃত্তের সূত্র সমূহ মনে রাখতে পারবেন।
উপবৃত্তের সূত্র সমূহ
উপবৃত্ত (Ellipse) হল এমন একটি জ্যামিতিক চিত্র যা দুটি নির্দিষ্ট বিন্দুর (ফোকাস) থেকে সমান দূরত্বের যোগফল সবসময় একটি নির্দিষ্ট মানে থাকে। এই প্রবন্ধে উপবৃত্তের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সূত্রসমূহ আলোচনা করা হয়েছে যার মাধ্যমে গণিতে উপবৃত্তের বিভিন্ন উপাদান সহজেই নির্ণয় করা যায়।
উপবৃত্তের উৎকেন্দ্রিকতা সূত্র
উৎকেন্দ্রিকতা বা Eccentricity (e) হলো উপবৃত্তের একটি বৈশিষ্ট্য যা এটিকে বৃত্ত থেকে কতটা বিভাজিত তা নির্দেশ করে। সূত্রটি হলো:
e = √(1 – (b²/a²))
যেখানে, a = অর্ধ প্রধান অক্ষ (semi-major axis), b = অর্ধ গৌণ অক্ষ (semi-minor axis)
উদাহরণ:
ধরি, একটি উপবৃত্তে a = 5 এবং b = 3
তাহলে, e = √(1 – (9/25)) = √(16/25) = 0.8
উপবৃত্তের সকল সূত্র
- উৎকেন্দ্রিকতা, e = √(1 – (b²/a²))
- ফোকাসের অবস্থান, c = √(a² – b²)
- ক্ষেত্রফল, A = πab
- সমীকরণ (x²/a²) + (y²/b²) = 1
- পরিধি (সন্নিকট মান), P ≈ π[3(a + b) – √((3a + b)(a + 3b))]
উদাহরণ:
a = 6, b = 4 হলে:
e = √(1 – (16/36)) = √(20/36) = √(5/9) ≈ 0.745
উপবৃত্তের ক্ষেত্রফলের সূত্র
উপবৃত্তের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সাধারণ সূত্র হলো:
A = πab
যেখানে a এবং b যথাক্রমে অর্ধ প্রধান ও অর্ধ গৌণ অক্ষ।
উদাহরণ:
a = 7 এবং b = 3 হলে:
A = π × 7 × 3 = 21π ≈ 65.97 একক²
উপবৃত্তের সমীকরণ সূত্র
উপবৃত্তের সাধারণ সমীকরণ দুটি রূপে হতে পারে:
- যদি প্রধান অক্ষ x-অক্ষ বরাবর হয়: (x²/a²) + (y²/b²) = 1
- যদি প্রধান অক্ষ y-অক্ষ বরাবর হয়: (x²/b²) + (y²/a²) = 1
উদাহরণ:
a = 4, b = 2 হলে সমীকরণ: (x²/16) + (y²/4) = 1
উপবৃত্তের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্র
উপবৃত্তের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের জন্য πab সূত্রটি ব্যবহৃত হয়। এটির মাধ্যমেই উপবৃত্তের অভ্যন্তরীণ এলাকা নির্ণয় করা যায়।
উদাহরণ:
যদি a = 8 এবং b = 5 হয়, তাহলে:
A = π × 8 × 5 = 40π ≈ 125.66 একক²
উপবৃত্তের আয়তন নির্ণয়ের সূত্র
যদি উপবৃত্তকে তিনটি মাত্রায় বিবেচনা করা হয় এবং এটি একটি উপবৃত্তাকার ঘূর্ণন পৃষ্ঠ হয় (ellipsoid), তাহলে আয়তন নির্ণয়ের সূত্র হলো:
V = (4/3)πabc
যেখানে, a, b এবং c হল তিনটি অক্ষের অর্ধ দৈর্ঘ্য।
উদাহরণ:
a = 4, b = 3, c = 2 হলে:
V = (4/3)π × 4 × 3 × 2 = (4/3)π × 24 = 32π ≈ 100.53 ঘন একক
উপবৃত্তের পরিধির সূত্র
উপবৃত্তের পরিধি নির্ণয় করা কঠিন, তবে সন্নিকট মানের জন্য Ramanujan এর সূত্র ব্যবহৃত হয়:
P ≈ π[3(a + b) – √((3a + b)(a + 3b))]
উদাহরণ:
a = 5, b = 3 হলে:
P ≈ π[3(5 + 3) – √((3×5 + 3)(5 + 3×3))] = π[24 – √(18×14)] ≈ π(24 – 15.87) ≈ π × 8.13 ≈ 25.54 একক
উপবৃত্তের ফোকাস সূত্র
উপবৃত্তের ফোকাসের অবস্থান নির্ণয় করা হয় নিচের সূত্র দ্বারা:
c = √(a² – b²)
এখানে, c হলো কেন্দ্র থেকে ফোকাস পর্যন্ত দূরত্ব।
উদাহরণ:
a = 6, b = 4 হলে:
c = √(36 – 16) = √20 ≈ 4.47 একক
FAQ: উপবৃত্তের সূত্র সংক্রান্ত সাধারণ প্রশ্নোত্তর
Q1: উপবৃত্ত ও বৃত্তের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর: বৃত্তে দুটি অক্ষের দৈর্ঘ্য সমান থাকে (a = b), আর উপবৃত্তে ভিন্ন হয়।
Q2: উপবৃত্তের পরিধি নির্ণয় কি সম্ভব?
উত্তর: হ্যাঁ, তবে এটি সরলভাবে নির্ণয় করা যায় না, সন্নিকট সূত্র ব্যবহৃত হয়।
Q3: উপবৃত্তের ফোকাস কী?
উত্তর: উপবৃত্তের দুটি নির্দিষ্ট বিন্দু যাদের থেকে যেকোনো বিন্দুর দূরত্বের যোগফল স্থির থাকে, তাই ফোকাস।
Q4: উপবৃত্তের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ে π কেন ব্যবহৃত হয়?
উত্তর: উপবৃত্ত বৃত্তের মত একটি গোলাকার চিত্র হওয়ায় ক্ষেত্রফলে π ব্যবহৃত হয়।
Q5: উপবৃত্তের বাস্তব জীবনের ব্যবহার কোথায় দেখা যায়?
উত্তর: গ্রহের কক্ষপথ, কিছু স্থাপত্য নকশা এবং উপগ্রহের গতি উপবৃত্তীয় হয়।