হিসাবের ডেবিট ক্রেডিট নির্ণয়ের সূত্র

- প্রকাশিত : ০৩:৪৫:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
- / 25
হিসাবের ডেবিট ক্রেডিট নির্ণয়ের সূত্র সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন। নিচে হিসাবের ডেবিট ক্রেডিট নির্ণয়ের সূত্র তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি ডেবিট ক্রেডিট সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে।
হিসাবের ডেবিট ক্রেডিট নির্ণয়ের সূত্র
হিসাববিজ্ঞান (Accounting) এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ডেবিট এবং ক্রেডিট নির্ণয়। প্রতিটি আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে ডেবিট এবং ক্রেডিট সনাক্ত করা হিসাব রক্ষার জন্য অপরিহার্য। এই লেখায় আমরা আলোচনা করবো ডেবিট-ক্রেডিট নির্ণয়ের সহজ সূত্র ও এর প্রয়োগ কৌশল।
সম্পদের হিসাব (Assets Account)
যখন কোনো সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, তখন তা ডেবিট হয়। আর যখন সম্পদের পরিমাণ কমে, তখন তা ক্রেডিট হয়। সম্পদ বলতে নগদ টাকা, যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র ইত্যাদি বোঝানো হয়।
উদাহরণ: একটি প্রতিষ্ঠান নগদ ২০,০০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করলো। এখানে নগদ সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই নগদ অ্যাকাউন্টটি ডেবিট হবে।
দায়ের হিসাব (Liabilities Account)
যখন কোনো দায় বা ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, তখন তা ক্রেডিট হয় এবং কমলে ডেবিট হয়। দায় বলতে ব্যাংক ঋণ, পাওনাদারদের বকেয়া ইত্যাদি বোঝানো হয়।
উদাহরণ: কোম্পানি একটি ব্যাংক থেকে ৫০,০০০ টাকা ঋণ গ্রহণ করলো। এখানে দায় বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই ব্যাংক ঋণ অ্যাকাউন্টটি ক্রেডিট হবে।
মালিকানা বা মূলধনের হিসাব (Owner’s Equity Account)
যখন মূলধনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, তখন তা ক্রেডিট হয়। আর যখন মালিক কোনো টাকা উত্তোলন করে বা ক্ষতি হয়, তখন তা ডেবিট হয়।
উদাহরণ: মালিক ব্যবসায়ে ১,০০,০০০ টাকা মূলধন বিনিয়োগ করলেন। এখানে মূলধন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই এটি ক্রেডিট হবে।
আয়ের হিসাব (Income Account)
যখন কোনো আয় বা ইনকাম হয়, তখন তা ক্রেডিট হয়। আয়ের মধ্যে বিক্রয়, কমিশন প্রাপ্তি, সুদ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
উদাহরণ: একটি প্রতিষ্ঠান ৩০,০০০ টাকা মূল্যের পণ্য বিক্রি করলো। এটি একটি বিক্রয় আয়, তাই বিক্রয় অ্যাকাউন্টটি ক্রেডিট হবে।
ব্যয়ের হিসাব (Expense Account)
যখন কোনো ব্যয় ঘটে, তখন তা ডেবিট হয়। ব্যয়ের মধ্যে বেতন, ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
উদাহরণ: একটি অফিস মাসিক ভাড়া বাবদ ১০,০০০ টাকা পরিশোধ করলো। এখানে ভাড়া একটি ব্যয়, তাই এটি ডেবিট হবে।
FAQ
Q1: ডেবিট এবং ক্রেডিট কী?
A1: ডেবিট অর্থ হলো সম্পদ ও ব্যয় বৃদ্ধি, এবং ক্রেডিট অর্থ হলো দায়, আয় ও মূলধন বৃদ্ধি। এটি হিসাবের ভারসাম্য রক্ষা করে।
Q2: কোন অ্যাকাউন্ট ডেবিট হবে আর কোনটি ক্রেডিট হবে তা কীভাবে বুঝবো?
A2: সম্পদ ও ব্যয় বাড়লে ডেবিট হয়, আর দায়, আয় ও মূলধন বাড়লে ক্রেডিট হয় — এই সূত্র অনুসরণ করলেই বুঝা যায়।
Q3: একটি লেনদেন কি শুধু ডেবিট না শুধু ক্রেডিট হতে পারে?
A3: না, প্রতিটি লেনদেনে অন্তত একটি অ্যাকাউন্ট ডেবিট এবং একটি অ্যাকাউন্ট ক্রেডিট হবে — এটিই দ্বৈত হিসাব পদ্ধতির নিয়ম।
Q4: কি ধরনের অ্যাকাউন্ট সবচেয়ে বেশি ডেবিট হয়?
A4: ব্যয় এবং সম্পদের অ্যাকাউন্ট সবচেয়ে বেশি ডেবিট হয়, যেমন বেতন, ভাড়া, নগদ ইত্যাদি।
Q5: হিসাব রক্ষায় ডেবিট-ক্রেডিট সঠিকভাবে নির্ণয় না করলে কী সমস্যা হতে পারে?
A5: ভুল ডেবিট-ক্রেডিট নির্ধারণের ফলে হিসাব বইতে ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হয় না এবং এতে আর্থিক প্রতিবেদন ভুল হতে পারে।