Dhaka ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র

এসবি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ০২:৩২:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • / 51

ত্রিভুজ একটি সাধারণ জ্যামিতিক আকৃতি যার তিনটি বাহু এবং তিনটি কোণ থাকে। যেকোনো ত্রিভুজের গঠন বিশ্লেষণ করতে হলে, তার পরিসীমা জানা অত্যন্ত জরুরি। এই লেখায় আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র, বিভিন্ন ধরনের ত্রিভুজের পরিসীমা কীভাবে বের করা যায় এবং কিছু বাস্তব উদাহরণ।

ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র কি

ত্রিভুজের পরিসীমা বলতে বোঝায়, তার তিনটি বাহুর মোট দৈর্ঘ্য। এটি নির্ণয়ের জন্য একটি সাধারণ সূত্র রয়েছে:

পরিসীমা (P) = a + b + c

যেখানে a, b ও c হলো ত্রিভুজের তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্য।

উদাহরণ:

একটি ত্রিভুজের তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্য যথাক্রমে 5 সেমি, 6 সেমি এবং 7 সেমি।

তাহলে পরিসীমা = 5 + 6 + 7 = 18 সেমি।

ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র কী

এই প্রশ্নটি পূর্বের প্রশ্নের মতো হলেও এখানে “কি” শব্দটি “কী” দ্বারা লেখা হয়েছে যা বাংলা ব্যাকরণ অনুযায়ী সঠিক।

ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র:

P = a + b + c

উদাহরণ:

a = 4 সেমি, b = 4 সেমি, c = 6 সেমি হলে

P = 4 + 4 + 6 = 14 সেমি।

সমবাহু ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র

সমবাহু ত্রিভুজে তিনটি বাহুই সমান হয়। যদি প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য হয় a, তাহলে:

পরিসীমা = 3a

উদাহরণ:

একটি সমবাহু ত্রিভুজের প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য 7 সেমি হলে,

পরিসীমা = 3 × 7 = 21 সেমি।

সমকোণী ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র

সমকোণী ত্রিভুজে একটি কোণ ৯০ ডিগ্রি হয়। এই ধরনের ত্রিভুজে পিথাগোরাসের উপপাদ্য ব্যবহার করে তৃতীয় বাহু নির্ণয় করা যায়।

যদি দুইটি লম্ব বাহু হয় a এবং b, তবে অতিভুজ c = √(a² + b²)

তাহলে, পরিসীমা = a + b + c

উদাহরণ:

a = 3 সেমি, b = 4 সেমি

তাহলে, c = √(3² + 4²) = √(9 + 16) = √25 = 5

পরিসীমা = 3 + 4 + 5 = 12 সেমি।

সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র

সমদ্বিবাহু ত্রিভুজে দুটি বাহু সমান। যদি সমান দুটি বাহু হয় a এবং ভিত্তি হয় b, তাহলে:

পরিসীমা = a + a + b = 2a + b

উদাহরণ:

a = 6 সেমি, b = 4 সেমি

পরিসীমা = 2×6 + 4 = 12 + 4 = 16 সেমি।

বিষমবাহু ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র

বিষমবাহু ত্রিভুজে সব বাহু ভিন্ন ভিন্ন হয়। এই ক্ষেত্রে সাধারণ সূত্রই ব্যবহার হয়:

পরিসীমা = a + b + c

উদাহরণ:

a = 5 সেমি, b = 6 সেমি, c = 8 সেমি

পরিসীমা = 5 + 6 + 8 = 19 সেমি।

ত্রিভুজের অর্ধ পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র

অর্ধ পরিসীমা (s) বলতে বোঝায়, ত্রিভুজের তিনটি বাহুর যোগফলকে ২ দিয়ে ভাগ করলে যা পাওয়া যায়।

s = (a + b + c) / 2

উদাহরণ:

a = 6 সেমি, b = 8 সেমি, c = 10 সেমি

s = (6 + 8 + 10) / 2 = 24 / 2 = 12 সেমি।

অর্ধ পরিসীমা সাধারণত হেরনের সূত্রে ক্ষেত্রফল নির্ণয়ে ব্যবহার হয়।

সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র কি

এই প্রশ্নে “কি” ব্যবহৃত হলেও তা “কী” হওয়া উচিত। তবে, অর্থ একই:

পরিসীমা = 2a + b

উদাহরণ:

a = 7 সেমি, b = 6 সেমি

পরিসীমা = 2×7 + 6 = 14 + 6 = 20 সেমি।

ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল ও পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র

ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের একটি জনপ্রিয় সূত্র হলো হেরনের সূত্র, যা অর্ধ পরিসীমা s ব্যবহার করে:

ক্ষেত্রফল = √[s(s−a)(s−b)(s−c)]

এখানে, s = (a + b + c) / 2

উদাহরণ:

a = 5 সেমি, b = 6 সেমি, c = 7 সেমি

s = (5 + 6 + 7)/2 = 9

ক্ষেত্রফল = √[9(9−5)(9−6)(9−7)] = √[9×4×3×2] = √216 ≈ 14.7 বর্গ সেমি

পরিসীমা = 5 + 6 + 7 = 18 সেমি

FAQ (সচরাচর জিজ্ঞাস্য)

Q1: ত্রিভুজের পরিসীমা কিভাবে বের করবো?

উত্তর: ত্রিভুজের তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্য যোগ করলেই পরিসীমা পাওয়া যায়। সূত্র: P = a + b + c

Q2: হেরনের সূত্রে কোন কোন মান দরকার?

উত্তর: তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্য ও অর্ধ পরিসীমা s-এর মান জানলেই হেরনের সূত্র প্রয়োগ করা যায়।

Q3: সমকোণী ত্রিভুজে কি পিথাগোরাস সূত্র প্রযোজ্য?

উত্তর: হ্যাঁ, সমকোণী ত্রিভুজে পিথাগোরাসের উপপাদ্য প্রযোজ্য এবং তা দিয়ে অতিভুজ নির্ণয় করা যায়।

Q5: পরিসীমা ও ক্ষেত্রফল কি এক জিনিস?

উত্তর: না, পরিসীমা মানে বাহুগুলোর মোট দৈর্ঘ্য আর ক্ষেত্রফল মানে ত্রিভুজের ভেতরের এলাকা বা আয়তন। 

ট্যাগ :

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টটি শেয়ার করুন

রিপোর্টারের প্রফাইল

ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র

প্রকাশিত : ০২:৩২:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫

ত্রিভুজ একটি সাধারণ জ্যামিতিক আকৃতি যার তিনটি বাহু এবং তিনটি কোণ থাকে। যেকোনো ত্রিভুজের গঠন বিশ্লেষণ করতে হলে, তার পরিসীমা জানা অত্যন্ত জরুরি। এই লেখায় আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র, বিভিন্ন ধরনের ত্রিভুজের পরিসীমা কীভাবে বের করা যায় এবং কিছু বাস্তব উদাহরণ।

ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র কি

ত্রিভুজের পরিসীমা বলতে বোঝায়, তার তিনটি বাহুর মোট দৈর্ঘ্য। এটি নির্ণয়ের জন্য একটি সাধারণ সূত্র রয়েছে:

পরিসীমা (P) = a + b + c

যেখানে a, b ও c হলো ত্রিভুজের তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্য।

উদাহরণ:

একটি ত্রিভুজের তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্য যথাক্রমে 5 সেমি, 6 সেমি এবং 7 সেমি।

তাহলে পরিসীমা = 5 + 6 + 7 = 18 সেমি।

ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র কী

এই প্রশ্নটি পূর্বের প্রশ্নের মতো হলেও এখানে “কি” শব্দটি “কী” দ্বারা লেখা হয়েছে যা বাংলা ব্যাকরণ অনুযায়ী সঠিক।

ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র:

P = a + b + c

উদাহরণ:

a = 4 সেমি, b = 4 সেমি, c = 6 সেমি হলে

P = 4 + 4 + 6 = 14 সেমি।

সমবাহু ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র

সমবাহু ত্রিভুজে তিনটি বাহুই সমান হয়। যদি প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য হয় a, তাহলে:

পরিসীমা = 3a

উদাহরণ:

একটি সমবাহু ত্রিভুজের প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য 7 সেমি হলে,

পরিসীমা = 3 × 7 = 21 সেমি।

সমকোণী ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র

সমকোণী ত্রিভুজে একটি কোণ ৯০ ডিগ্রি হয়। এই ধরনের ত্রিভুজে পিথাগোরাসের উপপাদ্য ব্যবহার করে তৃতীয় বাহু নির্ণয় করা যায়।

যদি দুইটি লম্ব বাহু হয় a এবং b, তবে অতিভুজ c = √(a² + b²)

তাহলে, পরিসীমা = a + b + c

উদাহরণ:

a = 3 সেমি, b = 4 সেমি

তাহলে, c = √(3² + 4²) = √(9 + 16) = √25 = 5

পরিসীমা = 3 + 4 + 5 = 12 সেমি।

সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র

সমদ্বিবাহু ত্রিভুজে দুটি বাহু সমান। যদি সমান দুটি বাহু হয় a এবং ভিত্তি হয় b, তাহলে:

পরিসীমা = a + a + b = 2a + b

উদাহরণ:

a = 6 সেমি, b = 4 সেমি

পরিসীমা = 2×6 + 4 = 12 + 4 = 16 সেমি।

বিষমবাহু ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র

বিষমবাহু ত্রিভুজে সব বাহু ভিন্ন ভিন্ন হয়। এই ক্ষেত্রে সাধারণ সূত্রই ব্যবহার হয়:

পরিসীমা = a + b + c

উদাহরণ:

a = 5 সেমি, b = 6 সেমি, c = 8 সেমি

পরিসীমা = 5 + 6 + 8 = 19 সেমি।

ত্রিভুজের অর্ধ পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র

অর্ধ পরিসীমা (s) বলতে বোঝায়, ত্রিভুজের তিনটি বাহুর যোগফলকে ২ দিয়ে ভাগ করলে যা পাওয়া যায়।

s = (a + b + c) / 2

উদাহরণ:

a = 6 সেমি, b = 8 সেমি, c = 10 সেমি

s = (6 + 8 + 10) / 2 = 24 / 2 = 12 সেমি।

অর্ধ পরিসীমা সাধারণত হেরনের সূত্রে ক্ষেত্রফল নির্ণয়ে ব্যবহার হয়।

সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র কি

এই প্রশ্নে “কি” ব্যবহৃত হলেও তা “কী” হওয়া উচিত। তবে, অর্থ একই:

পরিসীমা = 2a + b

উদাহরণ:

a = 7 সেমি, b = 6 সেমি

পরিসীমা = 2×7 + 6 = 14 + 6 = 20 সেমি।

ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল ও পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র

ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের একটি জনপ্রিয় সূত্র হলো হেরনের সূত্র, যা অর্ধ পরিসীমা s ব্যবহার করে:

ক্ষেত্রফল = √[s(s−a)(s−b)(s−c)]

এখানে, s = (a + b + c) / 2

উদাহরণ:

a = 5 সেমি, b = 6 সেমি, c = 7 সেমি

s = (5 + 6 + 7)/2 = 9

ক্ষেত্রফল = √[9(9−5)(9−6)(9−7)] = √[9×4×3×2] = √216 ≈ 14.7 বর্গ সেমি

পরিসীমা = 5 + 6 + 7 = 18 সেমি

FAQ (সচরাচর জিজ্ঞাস্য)

Q1: ত্রিভুজের পরিসীমা কিভাবে বের করবো?

উত্তর: ত্রিভুজের তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্য যোগ করলেই পরিসীমা পাওয়া যায়। সূত্র: P = a + b + c

Q2: হেরনের সূত্রে কোন কোন মান দরকার?

উত্তর: তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্য ও অর্ধ পরিসীমা s-এর মান জানলেই হেরনের সূত্র প্রয়োগ করা যায়।

Q3: সমকোণী ত্রিভুজে কি পিথাগোরাস সূত্র প্রযোজ্য?

উত্তর: হ্যাঁ, সমকোণী ত্রিভুজে পিথাগোরাসের উপপাদ্য প্রযোজ্য এবং তা দিয়ে অতিভুজ নির্ণয় করা যায়।

Q5: পরিসীমা ও ক্ষেত্রফল কি এক জিনিস?

উত্তর: না, পরিসীমা মানে বাহুগুলোর মোট দৈর্ঘ্য আর ক্ষেত্রফল মানে ত্রিভুজের ভেতরের এলাকা বা আয়তন।