Dhaka ০৫:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পড়ন্ত বস্তুর তৃতীয় সূত্র উদাহরণ ব্যাখ্যা

এসবি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ০৯:০৭:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫
  • / 20

পড়ন্ত বস্তুর তৃতীয় সূত্র কী, এর ব্যাখ্যা, সূত্রাবলী, অংক ও বেগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগের সাথে পড়ুন। এই এই আর্টিকেলটিতে পড়ন্ত বস্তুর তৃতীয় সূত্র উদাহরণ ও ব্যাখ্যা সহকারে তুলে ধরা হয়েছে।

পড়ন্ত বস্তুর তৃতীয় সূত্র

পড়ন্ত বস্তুর তৃতীয় সূত্র নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্র হিসেবে পরিচিত, যা বলছে, “প্রত্যেক ক্রিয়ার জন্য একটি সমান এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকে।” এটি পদার্থবিদ্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি যা পড়ন্ত বস্তুর গতি বোঝার জন্য অপরিহার্য।

উদাহরণ: আপনি যদি একটি বল দেয়ালে ছুঁড়ে মারেন, সেটি দেয়াল থেকে ফিরে আসে। এখানে বলের দেয়ালে প্রয়োগকৃত বলের বিপরীত একটি প্রতিক্রিয়া বল কাজ করে, যা বলটিকে ফিরে পাঠায়।

পড়ন্ত বস্তুর তৃতীয় সূত্র ব্যাখ্যা

নিউটনের তৃতীয় সূত্র পড়ন্ত বস্তুর গতির ক্ষেত্রে ব্যবহার করলে আমরা দেখতে পাই যে, মাধ্যাকর্ষণ বল দ্বারা বস্তুকে নিচের দিকে টেনে আনা হয় এবং এই টানার বিপরীতে বস্তুর ভরের কারণে একটি প্রতিক্রিয়া বল কাজ করে। যদিও এই প্রতিক্রিয়া বল বস্তুটিকে থামাতে পারে না, তবে এটি গতির বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

উদাহরণ: একটি আপেল গাছ থেকে পড়ে গেলে, পৃথিবী আপেলকে টানে এবং একই সময়ে আপেলও পৃথিবীকে সামান্য পরিমাণে টানে। তবে পৃথিবীর ভর অনেক বেশি হওয়ায় আমরা সেই প্রতিক্রিয়া দেখতে পাই না।

পড়ন্ত বস্তুর সূত্রাবলী

পড়ন্ত বস্তুর গতির বিভিন্ন গাণিতিক সূত্র রয়েছে যা বস্তুটির বেগ, সময় এবং দূরত্ব নির্ধারণে সাহায্য করে। মূল সূত্রগুলো হল:

  • v = u + gt
  • s = ut + ½gt²
  • v² = u² + 2gs

এখানে, u = প্রাথমিক বেগ, v = শেষ বেগ, g = অভিকর্ষজ ত্বরণ (৯.৮ মি/সেকেন্ড²), t = সময়, s = চলার দূরত্ব।

উদাহরণ: একটি বল ৫ সেকেন্ড ধরে পড়ছে। যদি প্রাথমিক বেগ u = ০ হয়, তাহলে শেষ বেগ v = ০ + ৯.৮ × ৫ = ৪৯ মি/সেকেন্ড।

পড়ন্ত বস্তুর সূত্র

পড়ন্ত বস্তুর সূত্রগুলো ব্যবহার করে আমরা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর বের করতে পারি। যেমন, বস্তু কত দূর পর্যন্ত পড়েছে, কত সময়ে পড়েছে, কিংবা পড়ার সময় বেগ কত ছিলো। এগুলো পদার্থবিজ্ঞানের পরীক্ষায় সাধারণত জিজ্ঞাসা করা হয়।

উদাহরণ: একটি বস্তুকে বিশ্রাম অবস্থায় থেকে নিচে ফেললে ৩ সেকেন্ডে কত দূর যাবে? s = ut + ½gt² = ০ + ½ × ৯.৮ × ৩² = ৪৪.১ মিটার।

পড়ন্ত বস্তুর অংক

চলুন একটি সমস্যার সমাধান করি:

প্রশ্ন: একটি বস্তুকে মাটির উপর থেকে ফেলে দিলে ৪ সেকেন্ড পরে মাটিতে পৌঁছায়। বস্তুটি কত উচ্চতা থেকে ফেলা হয়েছিলো?

উত্তর: s = ut + ½gt² = ০ + ½ × ৯.৮ × ৪² = ০.৫ × ৯.৮ × ১৬ = ৭৮.৪ মিটার।
অতএব, উচ্চতা ছিলো ৭৮.৪ মিটার।

পড়ন্ত বস্তুর বেগ

যখন একটি বস্তু পড়ে, তখন তার বেগ সময়ের সাথে বাড়তে থাকে কারণ এটি মাধ্যাকর্ষণ বল দ্বারা ত্বরণ পায়। নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র অনুযায়ী, বল = ভর × ত্বরণ। ত্বরণ g হলে, বেগ নির্ণয় করা যায়:

v = u + gt

উদাহরণ: একটি বস্তু ৬ সেকেন্ড ধরে পড়েছে এবং প্রাথমিক বেগ u = ০। তাহলে v = ০ + ৯.৮ × ৬ = ৫৮.৮ মি/সেকেন্ড।

উপসংহার

পড়ন্ত বস্তুর তৃতীয় সূত্র এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রাবলী আমাদের প্রকৃতিতে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন গতির ঘটনাকে সহজে বুঝতে সাহায্য করে। সঠিকভাবে সূত্র প্রয়োগের মাধ্যমে আমরা সঠিক গণনা করতে পারি যা পরীক্ষার ক্ষেত্রেও উপযোগী।

ট্যাগ :

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টটি শেয়ার করুন

রিপোর্টারের প্রফাইল

পড়ন্ত বস্তুর তৃতীয় সূত্র উদাহরণ ব্যাখ্যা

প্রকাশিত : ০৯:০৭:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫

পড়ন্ত বস্তুর তৃতীয় সূত্র কী, এর ব্যাখ্যা, সূত্রাবলী, অংক ও বেগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগের সাথে পড়ুন। এই এই আর্টিকেলটিতে পড়ন্ত বস্তুর তৃতীয় সূত্র উদাহরণ ও ব্যাখ্যা সহকারে তুলে ধরা হয়েছে।

পড়ন্ত বস্তুর তৃতীয় সূত্র

পড়ন্ত বস্তুর তৃতীয় সূত্র নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্র হিসেবে পরিচিত, যা বলছে, “প্রত্যেক ক্রিয়ার জন্য একটি সমান এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকে।” এটি পদার্থবিদ্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি যা পড়ন্ত বস্তুর গতি বোঝার জন্য অপরিহার্য।

উদাহরণ: আপনি যদি একটি বল দেয়ালে ছুঁড়ে মারেন, সেটি দেয়াল থেকে ফিরে আসে। এখানে বলের দেয়ালে প্রয়োগকৃত বলের বিপরীত একটি প্রতিক্রিয়া বল কাজ করে, যা বলটিকে ফিরে পাঠায়।

পড়ন্ত বস্তুর তৃতীয় সূত্র ব্যাখ্যা

নিউটনের তৃতীয় সূত্র পড়ন্ত বস্তুর গতির ক্ষেত্রে ব্যবহার করলে আমরা দেখতে পাই যে, মাধ্যাকর্ষণ বল দ্বারা বস্তুকে নিচের দিকে টেনে আনা হয় এবং এই টানার বিপরীতে বস্তুর ভরের কারণে একটি প্রতিক্রিয়া বল কাজ করে। যদিও এই প্রতিক্রিয়া বল বস্তুটিকে থামাতে পারে না, তবে এটি গতির বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

উদাহরণ: একটি আপেল গাছ থেকে পড়ে গেলে, পৃথিবী আপেলকে টানে এবং একই সময়ে আপেলও পৃথিবীকে সামান্য পরিমাণে টানে। তবে পৃথিবীর ভর অনেক বেশি হওয়ায় আমরা সেই প্রতিক্রিয়া দেখতে পাই না।

পড়ন্ত বস্তুর সূত্রাবলী

পড়ন্ত বস্তুর গতির বিভিন্ন গাণিতিক সূত্র রয়েছে যা বস্তুটির বেগ, সময় এবং দূরত্ব নির্ধারণে সাহায্য করে। মূল সূত্রগুলো হল:

  • v = u + gt
  • s = ut + ½gt²
  • v² = u² + 2gs

এখানে, u = প্রাথমিক বেগ, v = শেষ বেগ, g = অভিকর্ষজ ত্বরণ (৯.৮ মি/সেকেন্ড²), t = সময়, s = চলার দূরত্ব।

উদাহরণ: একটি বল ৫ সেকেন্ড ধরে পড়ছে। যদি প্রাথমিক বেগ u = ০ হয়, তাহলে শেষ বেগ v = ০ + ৯.৮ × ৫ = ৪৯ মি/সেকেন্ড।

পড়ন্ত বস্তুর সূত্র

পড়ন্ত বস্তুর সূত্রগুলো ব্যবহার করে আমরা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর বের করতে পারি। যেমন, বস্তু কত দূর পর্যন্ত পড়েছে, কত সময়ে পড়েছে, কিংবা পড়ার সময় বেগ কত ছিলো। এগুলো পদার্থবিজ্ঞানের পরীক্ষায় সাধারণত জিজ্ঞাসা করা হয়।

উদাহরণ: একটি বস্তুকে বিশ্রাম অবস্থায় থেকে নিচে ফেললে ৩ সেকেন্ডে কত দূর যাবে? s = ut + ½gt² = ০ + ½ × ৯.৮ × ৩² = ৪৪.১ মিটার।

পড়ন্ত বস্তুর অংক

চলুন একটি সমস্যার সমাধান করি:

প্রশ্ন: একটি বস্তুকে মাটির উপর থেকে ফেলে দিলে ৪ সেকেন্ড পরে মাটিতে পৌঁছায়। বস্তুটি কত উচ্চতা থেকে ফেলা হয়েছিলো?

উত্তর: s = ut + ½gt² = ০ + ½ × ৯.৮ × ৪² = ০.৫ × ৯.৮ × ১৬ = ৭৮.৪ মিটার।
অতএব, উচ্চতা ছিলো ৭৮.৪ মিটার।

পড়ন্ত বস্তুর বেগ

যখন একটি বস্তু পড়ে, তখন তার বেগ সময়ের সাথে বাড়তে থাকে কারণ এটি মাধ্যাকর্ষণ বল দ্বারা ত্বরণ পায়। নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র অনুযায়ী, বল = ভর × ত্বরণ। ত্বরণ g হলে, বেগ নির্ণয় করা যায়:

v = u + gt

উদাহরণ: একটি বস্তু ৬ সেকেন্ড ধরে পড়েছে এবং প্রাথমিক বেগ u = ০। তাহলে v = ০ + ৯.৮ × ৬ = ৫৮.৮ মি/সেকেন্ড।

উপসংহার

পড়ন্ত বস্তুর তৃতীয় সূত্র এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রাবলী আমাদের প্রকৃতিতে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন গতির ঘটনাকে সহজে বুঝতে সাহায্য করে। সঠিকভাবে সূত্র প্রয়োগের মাধ্যমে আমরা সঠিক গণনা করতে পারি যা পরীক্ষার ক্ষেত্রেও উপযোগী।