Dhaka ০৪:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফ্যারাডের ২য় সূত্র

এসবি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ০৯:২৩:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
  • / 32

আপনি যদি ফ্যারাডের দ্বিতীয় সূত্র সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এই আর্টিকেলটিতে ফ্যারাডের দ্বিতীয় সূত্র উদাহরণ সহকারে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

ফ্যারাডের ২য় সূত্র

ফ্যারাডের ২য় সূত্র তড়িৎ রসায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম যা ইলেক্ট্রোলাইসিস প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট ধাতুর নিষ্কাশন প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করে। এই সূত্র মূলত বলে যে, বিভিন্ন পদার্থ দ্বারা উৎপন্ন পদার্থের ভর তাদের রাসায়নিক সমতুল্য ভরের সাথে সরাসরি অনুপাতিক। সহজভাবে বললে, যদি সমান পরিমাণ বিদ্যুৎ একাধিক পদার্থের মধ্যে চালানো হয়, তাহলে তাদের উৎপন্ন ভর রাসায়নিক সমতুল্যের উপর নির্ভর করবে।

🔬 ফ্যারাডের ২য় সূত্রের মূল বক্তব্য

ফ্যারাডের ২য় সূত্র অনুযায়ী, যখন সমান পরিমাণ তড়িৎ একাধিক ইলেক্ট্রোলাইটিক কোষের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়, তখন উৎপন্ন পদার্থের ভর তাদের সমতুল্য ভরের অনুপাত অনুযায়ী হয়। অর্থাৎ:

উৎপন্ন ভর ∝ রাসায়নিক সমতুল্য ভর (E)

এটি বোঝাতে সাহায্য করে যে একক তড়িৎ পরিমাণে কোন পদার্থ কতটা জমা হবে তা নির্ভর করে সেই পদার্থের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের উপর।

🧪 উদাহরণ:

ধরা যাক, সমান পরিমাণ বিদ্যুৎ সীসা (Pb) এবং তামা (Cu) এর ইলেক্ট্রোলাইটে প্রবাহিত করা হয়েছে। দেখা গেছে, সীসার রাসায়নিক সমতুল্য ভর 103.5 এবং তামার 31.75। তখন জমা হওয়া সীসা ও তামার ভরের অনুপাত হবে 103.5:31.75 অর্থাৎ সীসা বেশি পরিমাণে জমা হবে।

⚖️ রাসায়নিক সমতুল্য ভর কিভাবে নির্ধারণ করা হয়?

রাসায়নিক সমতুল্য ভর নির্ধারণ করতে নিচের সূত্রটি ব্যবহৃত হয়:

রাসায়নিক সমতুল্য ভর (E) = মৌলিক ভর / ইলেক্ট্রন স্থানান্তরের সংখ্যা (n)

এটি একটি পদার্থের ভর নির্ধারণে সহায়তা করে, যেটি নির্দিষ্ট পরিমাণ তড়িৎ গ্রহণ করলে জমা হয়।

🧪 উদাহরণ:

যদি তামার (Cu) মৌলিক ভর হয় 63.5 এবং এটি 2 ইলেকট্রন গ্রহণ করে, তাহলে:

E = 63.5 / 2 = 31.75

অর্থাৎ তামার রাসায়নিক সমতুল্য ভর হবে 31.75 গ্রাম।

⚡ ফ্যারাডে কাকে বলে?

ফ্যারাডে (Faraday) হলো একটি একক যা তড়িৎ পরিমাণ পরিমাপে ব্যবহৃত হয়। ১ ফ্যারাডে মানে হলো ৯৬,৫০০ কুলম্ব চার্জ, যা একটি মৌলের ১ মোল ইলেকট্রন স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজন। এটি ফ্যারাডের সূত্র ব্যবহারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

🧪 উদাহরণ:

১ ফ্যারাডে তড়িৎ যদি রুপার (Ag) ইলেক্ট্রোলাইটে চালানো হয়, তবে ১০৭.৮৭ গ্রাম রুপা জমা হবে, কারণ রুপার রাসায়নিক সমতুল্য ভর ১০৭.৮৭।

🔁 ফ্যারাডের ১ম ও ২য় সূত্রের পার্থক্য

যদিও উভয় সূত্র তড়িৎ রসায়ন ব্যাখ্যা করে, কিন্তু তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন।

  • ১ম সূত্র: উৎপন্ন ভর বিদ্যুৎ পরিমাণের সাথে সরাসরি অনুপাতিক।
  • ২য় সূত্র: বিভিন্ন পদার্থের ভর রাসায়নিক সমতুল্যের সাথে অনুপাতিক।

🧪 উদাহরণ:

১ম সূত্র অনুসারে, যদি বিদ্যুৎ দ্বিগুণ করা হয়, তবে উৎপন্ন ধাতুর ভরও দ্বিগুণ হবে।

২য় সূত্র অনুসারে, একি পরিমাণ বিদ্যুৎ চালালে তামা ও দস্তা ভিন্ন ভর জমা করবে তাদের সমতুল্য ভরের কারণে।

❓FAQ

Q1: ফ্যারাডের ২য় সূত্র কি বোঝায়?

ফ্যারাডের ২য় সূত্র বোঝায় যে সমান পরিমাণ তড়িৎ চালালে উৎপন্ন ধাতুর ভর তাদের রাসায়নিক সমতুল্য ভরের অনুপাত অনুযায়ী হয়।

Q2: রাসায়নিক সমতুল্য ভর কিভাবে নির্ধারণ করা যায়?

এটি নির্ধারণ করা যায় মৌলিক ভরকে ইলেকট্রন স্থানান্তরের সংখ্যা দিয়ে ভাগ করে।

Q3: ১ ফ্যারাডে কত কুলম্ব?

১ ফ্যারাডে = ৯৬,৫০০ কুলম্ব।

Q5: ফ্যারাডের ১ম ও ২য় সূত্রে পার্থক্য কী?

১ম সূত্র বিদ্যুৎ পরিমাণের সাথে উৎপন্ন ভরের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করে, আর ২য় সূত্র বিভিন্ন পদার্থের সমতুল্য ভরের সাথে সম্পর্ক ব্যাখ্যা করে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টটি শেয়ার করুন

রিপোর্টারের প্রফাইল

ফ্যারাডের ২য় সূত্র

প্রকাশিত : ০৯:২৩:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

আপনি যদি ফ্যারাডের দ্বিতীয় সূত্র সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এই আর্টিকেলটিতে ফ্যারাডের দ্বিতীয় সূত্র উদাহরণ সহকারে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

ফ্যারাডের ২য় সূত্র

ফ্যারাডের ২য় সূত্র তড়িৎ রসায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম যা ইলেক্ট্রোলাইসিস প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট ধাতুর নিষ্কাশন প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করে। এই সূত্র মূলত বলে যে, বিভিন্ন পদার্থ দ্বারা উৎপন্ন পদার্থের ভর তাদের রাসায়নিক সমতুল্য ভরের সাথে সরাসরি অনুপাতিক। সহজভাবে বললে, যদি সমান পরিমাণ বিদ্যুৎ একাধিক পদার্থের মধ্যে চালানো হয়, তাহলে তাদের উৎপন্ন ভর রাসায়নিক সমতুল্যের উপর নির্ভর করবে।

🔬 ফ্যারাডের ২য় সূত্রের মূল বক্তব্য

ফ্যারাডের ২য় সূত্র অনুযায়ী, যখন সমান পরিমাণ তড়িৎ একাধিক ইলেক্ট্রোলাইটিক কোষের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়, তখন উৎপন্ন পদার্থের ভর তাদের সমতুল্য ভরের অনুপাত অনুযায়ী হয়। অর্থাৎ:

উৎপন্ন ভর ∝ রাসায়নিক সমতুল্য ভর (E)

এটি বোঝাতে সাহায্য করে যে একক তড়িৎ পরিমাণে কোন পদার্থ কতটা জমা হবে তা নির্ভর করে সেই পদার্থের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের উপর।

🧪 উদাহরণ:

ধরা যাক, সমান পরিমাণ বিদ্যুৎ সীসা (Pb) এবং তামা (Cu) এর ইলেক্ট্রোলাইটে প্রবাহিত করা হয়েছে। দেখা গেছে, সীসার রাসায়নিক সমতুল্য ভর 103.5 এবং তামার 31.75। তখন জমা হওয়া সীসা ও তামার ভরের অনুপাত হবে 103.5:31.75 অর্থাৎ সীসা বেশি পরিমাণে জমা হবে।

⚖️ রাসায়নিক সমতুল্য ভর কিভাবে নির্ধারণ করা হয়?

রাসায়নিক সমতুল্য ভর নির্ধারণ করতে নিচের সূত্রটি ব্যবহৃত হয়:

রাসায়নিক সমতুল্য ভর (E) = মৌলিক ভর / ইলেক্ট্রন স্থানান্তরের সংখ্যা (n)

এটি একটি পদার্থের ভর নির্ধারণে সহায়তা করে, যেটি নির্দিষ্ট পরিমাণ তড়িৎ গ্রহণ করলে জমা হয়।

🧪 উদাহরণ:

যদি তামার (Cu) মৌলিক ভর হয় 63.5 এবং এটি 2 ইলেকট্রন গ্রহণ করে, তাহলে:

E = 63.5 / 2 = 31.75

অর্থাৎ তামার রাসায়নিক সমতুল্য ভর হবে 31.75 গ্রাম।

⚡ ফ্যারাডে কাকে বলে?

ফ্যারাডে (Faraday) হলো একটি একক যা তড়িৎ পরিমাণ পরিমাপে ব্যবহৃত হয়। ১ ফ্যারাডে মানে হলো ৯৬,৫০০ কুলম্ব চার্জ, যা একটি মৌলের ১ মোল ইলেকট্রন স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজন। এটি ফ্যারাডের সূত্র ব্যবহারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

🧪 উদাহরণ:

১ ফ্যারাডে তড়িৎ যদি রুপার (Ag) ইলেক্ট্রোলাইটে চালানো হয়, তবে ১০৭.৮৭ গ্রাম রুপা জমা হবে, কারণ রুপার রাসায়নিক সমতুল্য ভর ১০৭.৮৭।

🔁 ফ্যারাডের ১ম ও ২য় সূত্রের পার্থক্য

যদিও উভয় সূত্র তড়িৎ রসায়ন ব্যাখ্যা করে, কিন্তু তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন।

  • ১ম সূত্র: উৎপন্ন ভর বিদ্যুৎ পরিমাণের সাথে সরাসরি অনুপাতিক।
  • ২য় সূত্র: বিভিন্ন পদার্থের ভর রাসায়নিক সমতুল্যের সাথে অনুপাতিক।

🧪 উদাহরণ:

১ম সূত্র অনুসারে, যদি বিদ্যুৎ দ্বিগুণ করা হয়, তবে উৎপন্ন ধাতুর ভরও দ্বিগুণ হবে।

২য় সূত্র অনুসারে, একি পরিমাণ বিদ্যুৎ চালালে তামা ও দস্তা ভিন্ন ভর জমা করবে তাদের সমতুল্য ভরের কারণে।

❓FAQ

Q1: ফ্যারাডের ২য় সূত্র কি বোঝায়?

ফ্যারাডের ২য় সূত্র বোঝায় যে সমান পরিমাণ তড়িৎ চালালে উৎপন্ন ধাতুর ভর তাদের রাসায়নিক সমতুল্য ভরের অনুপাত অনুযায়ী হয়।

Q2: রাসায়নিক সমতুল্য ভর কিভাবে নির্ধারণ করা যায়?

এটি নির্ধারণ করা যায় মৌলিক ভরকে ইলেকট্রন স্থানান্তরের সংখ্যা দিয়ে ভাগ করে।

Q3: ১ ফ্যারাডে কত কুলম্ব?

১ ফ্যারাডে = ৯৬,৫০০ কুলম্ব।

Q5: ফ্যারাডের ১ম ও ২য় সূত্রে পার্থক্য কী?

১ম সূত্র বিদ্যুৎ পরিমাণের সাথে উৎপন্ন ভরের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করে, আর ২য় সূত্র বিভিন্ন পদার্থের সমতুল্য ভরের সাথে সম্পর্ক ব্যাখ্যা করে।