Sponsored

মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা রচনা pdf

0
46

বিভিন্ন শ্রেণীর একাডেমিক পরীক্ষায় "মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা রচনা" লিখতে বলা হয়ে থাকে।এই আর্টিকেলটিতে "মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা রচনা" তুলে ধরা হয়েছে। ভিন্ন বর্ণিত রচনাটি  আত্মস্থ করলে আপনি যেকোনো পরীক্ষায় "মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা রচনা" লিখতে পারবেন। 

উপস্থাপনা

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে সংঘটিত হয়। বিভিন্ন কারণে এই যুদ্ধটি সংঘটিত হয়েছিল। পশ্চিম পাকিস্তানের একপেশে নীতি, বঞ্চনা এবং রাজনৈতিকভাবে পূর্ব পাকিস্তানকে কোন ঠাসা করে রাখার অবধারিত পরিণতি ছিল মুক্তিযুদ্ধ। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ তাদের ভাষা, সংস্কৃতি এবং অর্থনৈতিক অধিকার নিয়ে বঞ্চনার শিকার হয়েছিল। এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের সংগ্রাম শেষ পর্যন্ত বাঙালি জাতির মুক্তিযুদ্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল। 

 

মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর প্রস্তুতি

মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় থেকেই সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা নিজেদের সংগঠিত করেন। পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে গঠিত হয়েছিল বিভিন্ন সামরিক বাহিনী। তাদের প্রশিক্ষণ এবং সরঞ্জামের জোগানের কিছু অংশ তৎকালীন মিত্র শক্তি ভারতের সহযোগিতায় করা হয়েছে। এবং অধিকাংশ স্বেচ্ছাসেবী মুক্তিযোদ্ধা নিজ উদ্যোগে নিজের এলাকায় নিজেরাই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। 

যেহেতু মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেই প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তা, পুলিশ সদস্য ছিলেন, তাই তারা খুব সহজেই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ যুবকদেরকে যুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষণ দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। এভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন নামে মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী গড়ে উঠেছিল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা অবিস্মরণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ। 

মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা

মুক্তিযুদ্ধের সময় সশস্ত্র বাহিনী খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা প্রশিক্ষিত সশস্ত্র বাহিনী ব্যতীত কখনোই কোন যুদ্ধে জয়লাভ করা সম্ভব নয়। তাই মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা প্রশ্নাতীত ভাবেই সর্বাধিক ছিল। যে সকল সিভিলিয়ান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন তারা মূলত সশস্ত্র বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছিলেন কেননা তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রেনিং প্রাপ্ত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। 

১. গেরিলা যুদ্ধের পরিকল্পনা ও কার্যক্রম

মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান কৌশল ছিল গেরিলা যুদ্ধ। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা ছোট ছোট দল গঠন করে শত্রু বাহিনীর ঘাঁটি অবস্থানস্থলে অতর্কিত আক্রমণ করেন। এ ধরণের আক্রমণ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে দেয় এবং তারা দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে চলে যেতে বাধ্য হন। বিভিন্নভাবে মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলের যুদ্ধ করে ছিলেন যেমন তারা:

  • রাস্তা এবং ব্রিজ ধ্বংস করে শত্রুর যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত করার মাধ্যমে শত্রুদেরকে বিতাড়িত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
  • শত্রু ক্যাম্পে আকস্মিক হামলা চালিয়ে শত্রুদেরকে বিভিন্ন জায়গায় পরাজিত করেছিলেন।
  • গোপন তথ্য সংগ্রহ করে তা হাই কমান্ডের নিকট প্রেরণ করে শত্রু পক্ষের বৃহৎ পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

২. মূল যুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিভিন্ন স্থানে বড় আকারে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এসব যুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনী সাহসিকতার সাথে অংশগ্রহণ করে এবং পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করে। তারা নিজেদেরকে সুসংহত রাখতে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন এবং যোদ্ধাদের মনোবল ধরে রাখতে ও বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। 

৩. মুক্তাঞ্চল প্রতিষ্ঠা

সশস্ত্র বাহিনীর আরেকটি বড় ভূমিকা ছিল মুক্তাঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা। তারা নির্দিষ্ট অঞ্চল শত্রুমুক্ত করে সেখানে প্রশাসনিক ব্যবস্থা স্থাপন করে। এসব মুক্তাঞ্চল ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল। এই মুক্তাঞ্চলগুলো, মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাটি হিসেবে ব্যবহৃত হতো যা সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ নিতে এবং প্রস্তুতি গ্রহণ করতে খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করেছিল। 

মিত্র শক্তির সহযোগিতা

ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতা মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল। ভারতীয় সেনাবাহিনী মুক্তিবাহিনীর প্রশিক্ষণ, অস্ত্র সরবরাহ এবং সামরিক পরিকল্পনায় সহায়তা করে। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সরাসরি হস্তক্ষেপ মুক্তিযুদ্ধকে ত্বরান্বিত করে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে ভূমিকা করে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় সশস্ত্র বাহিনীর চ্যালেঞ্জ

মুক্তিযুদ্ধের সময় সশস্ত্র বাহিনীকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছিল এবং তাদেরকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল। তবে সর্বোপরি তারা সব ধরনের প্রতিকূলতাকে এবং চ্যালেঞ্জ কে মোকাবেলা করে যুদ্ধে জয়লাভ করে। সাধারণত যে সকল প্রতিকূলতা সেসময় সশস্ত্র বাহিনীকে মোকাবেলা করতে হয়েছে সেগুলো হলো:

  • অপর্যাপ্ত অস্ত্র ও গোলাবারুদ।
  • সংগঠনের অভাব এবং প্রশিক্ষণের সীমাবদ্ধতা।
  • শত্রুপক্ষের মোকাবেলায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি না থাকা।

উপসংহার

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি গৌরবময় অধ্যায় যেখানে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে সাহসিকতা, ত্যাগ এবং কৌশলের এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করে। তাদের ত্যাগ, সাহস, এবং দেশের প্রতি ভালোবাসার কারণে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়। তাদের অবদান ।

Search
Categories
Read More
Math
প্রচুরক কাকে বলে | প্রচুরক নির্ণয়ের সূত্র
গণিত এবং পরিসংখ্যানের বিভিন্ন শাখায় প্রচুরক (Range) একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। এটি একটি সংখ্যার...
By nurislam 2024-11-07 12:15:52 0 648
Health
পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম এবং ঘরোয়া উপায়
পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম হলো: Sopilax, Abdolax, Laxante এবং Ezygo সাধারণত...
By nurislam 2024-11-02 04:31:20 0 561
Lifestyle
পর্দা পালন সম্পর্কিত পবিত্র কুরআনের ৭টি আয়াত
পর্দা পালন সম্পর্কিত পবিত্র কুরআনের ৭টি আয়াত আছে। আল্লাহ এই আয়াতগুলোর মাধ্যমে মানবজাতির জন্য...
By nurislam 2024-11-02 01:48:44 0 566
Math
একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা (সকল ক্লাসের জন্য)
একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় লিখতে বলা হয় থাকে। তাই যদি...
By nurislam 2024-11-10 17:57:12 0 480
Math
পরিবৃত্ত কাকে বলে | পরিবৃত্তের ব্যাসার্ধ নির্ণয়ের সূত্র
গণিতে, পরিবৃত্ত (Circumcircle) হলো একটি বৃত্ত যা একটি বহুভুজের সব শীর্ষবিন্দুকে স্পর্শ করে।...
By nurislam 2024-11-21 16:55:28 0 2